ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাজারে উধাও স্বাস্থ্য সচেতনতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
বাজারে উধাও স্বাস্থ্য সচেতনতা ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাস শনাক্তের হার বিবেচনায় সবুজ জোনে রয়েছে চট্টগ্রাম। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে উদাসীনতাই এর মূল কারণ।
 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও নগরের বাজারগুলো যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। কোনোরকম সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই বাজার করছেন ক্রেতারা। অনেক ক্রেতা মুখের মাস্ক খুলে বিক্রেতার কাছে জানতে চাচ্ছেন ‘আপনার ফুলকপি, আলুর দাম কতো’। এভাবেই অনেকে আবার রীতিমতো দরদামও করছেন। আর ক্রেতা ধরে রাখতে সামাজিক দূরত্বের কোনো কথা বলছেন না বিক্রেতারা। তাদের আশঙ্কা, এমনটা বললে হয়তো ক্রেতারা চলে যাবেন অন্য বিক্রেতার কাছে।

কাপড়ের দোকানগুলোতে একইভাবে ভিড় করছেন ক্রেতারা। যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে কফ-থুতু।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে করোনা প্রতিরোধে ১৫ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলামের সই করা এ সংক্রান্ত চিঠিতে নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে।

জনসমাগম নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা অন্য যেকোনো ধরনের জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজনে বাইরে গেলে প্রতিটি ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে সবসময় নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরতে হবে এবং সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, রেস্তোরাঁতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম করতে হবে। সব ধরনের জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কমসংখ্যক লোক অংশ নিতে পারবে।

মসজিদসহ সব ধরনের ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি গণপরিবহনেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। পাশাপাশি সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টারেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, অফিসে প্রবেশ ও অবস্থানের সময় বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়টি দাফতরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহীতা, সেবাদাতা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সবসময় সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। করোনা উপসর্গ বা লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কোভিড-১৯ লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে। এর সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখার কথাও স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধ প্রসঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কমিউনিটি পর্যায়ে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং ও প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার মাইক ব্যবহার এবং এ কার্যক্রমে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরও সম্পৃক্ত করা যেতে পারে বলেও স্বাস্থ্য অধিদফতর মনে করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।