ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জ্বালানি তেলের ৩৭ শতাংশ খাজনা মওকুফের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
জ্বালানি তেলের ৩৭ শতাংশ খাজনা মওকুফের দাবি ...

চট্টগ্রাম: বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিবো কিসে? জ্বালানি তেলে ৩৭ শতাংশ খাজনা মওকুফ করো গরিব-মধ্যবিত্তদের বাঁচতে দাও- এ স্লোগান সামনে রেখে মানববন্ধন করেছে গরিব-মধ্যবিত্ত শ্রেণির জনতা।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

এ সময় বক্তারা বলেন, করোনা-লকডাউন, বন্যা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এমনিতেই দেশের অর্থনীতি ভালো নেই। সব কিছুর দাম বাড়তি।

গরিবরা ঠিকমতো খেতে পায় না, মধ্যবিত্তরা খাবার কম খায়। সংসার চালাতে মা তার সন্তানকে বিক্রি করে, বাবা কিডনি বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেন। ঋণের চাপে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে দেশে। মূল্যস্ফীতিতে দেশের প্রতিটি জনগণ দিশেহারা। কিন্তু এর মধ্যে হঠাৎ করে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা'র মতো খবর অতি উচ্চহারে বৃদ্ধি করা হলো জ্বালানি তেলের মূল্য।  

মানববন্ধনে মুহম্মদ রাসেল বলেন, নতুন দামে ডিজেল ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা, পেট্রল ১৩০ টাকা করা হলো। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলা হলেও এই মূল্য প্রকৃতমূল্যের ওপর সরকারের নানা প্রকার শুল্ক ও কর সহকারে মূল্য। এই মূল্যের মধ্যে শুল্ক ১০ শতাংশ, অগ্রীম আয়কর ৫ শতাংশ, অগ্রীম ভ্যাট ৫ শতাংশসহ মোট শতকরা ৩৭ শতাংশ হচ্ছে সরকারি শুল্ক ও কর। এ যেন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এক বিরাট লাভজনক ব্যবসা।

ডিজেল: প্রকৃত মূল্য ৮৩ টাকা + শুল্ক ও কর ৩১ টাকা = নতুন মূল্য ১১৪ টাকা। পেট্রল: প্রকৃত মূল্য ৯৪ টাকা + শুল্ক ও কর ৩৬ টাকা = নতুন মূল্য ১৩০ টাকা। অকটেন: প্রকৃত মূল্য ৯৮ টাকা + শুল্ক ও কর ৩৭ টাকা = নতুন মূল্য ১৩৫ টাকা।

মানববন্ধনে মুহম্মদ সাজ্জাদ হুসাইন বলেন, জ্বালানি তেলের এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যাপক হারে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া। আর যেহেতু পরিবহনের সঙ্গে দৈনন্দিন সব মৌলিক খাত জড়িত, তাই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সব জীবন ব্যয় কয়েকগুণ বাড়ছে, যা দেশের ৯৯শতাংশ জনগণের জন্য সামাল দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এভাবে মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মৃত্যু ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।  

মুহম্মদ মাইনুদ্দিন বলেন, জনগণের জন্যই রাষ্ট্র, জনগণের জন্যই সরকার। সেই জনগণকে পেষণ করে রাষ্ট্র তার লাভজনক ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারে না। আজ যদি কোনো সাধারণ ব্যবসায়ী ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লাভ করতো, তবে সেটাকে অতি উচ্চ লাভ হিসেবে দেখা হতো। ম্যাজিস্ট্রেট ঐ ব্যবসায়ীর ব্যবসা সিলগালা করতো, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতো। একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লভ্যাংশকে যদি অনৈতিক হিসেবে দেখা হয়, তবে রাষ্ট্র কীভাবে কোটি কোটি জনগণের কাছ থেকে ৩৭ শতাংশ লাভে ব্যবসা করে? এ ব্যবসা চলতে থাকলে দেশে দুর্ভিক্ষ সুনিশ্চিত, যেখানে কোটি কোটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের মৃত্যু অবধারিত।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।