ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারতের লোকসভায় পেশ হল লোকপাল বিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১১

নয়াদিল্লি: ব্যাপক বিক্ষোভ আর দিনভর প্রবল বিতণ্ডা দফায় দফায় অধিবেশন মুলতুবির পর অবশেষে ভারতের লোকসভায় পেশ হয়েছে বহু চর্চিত লোকপাল বিল।

একই সঙ্গে এদিন খাদ্য সুরক্ষা বিলটিও পেশ হয়েছে লোকসভায়।



বৃহস্পতিবার লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়া মাত্রই একযোগে লোকপাল প্যানেলে সংখ্যালঘু সংরক্ষণের দাবিতে সরব হন লালুপ্রসাদ যাদব ও মুলায়ম সিং যাদবের দলের সাংসদরা।

অন্যদিকে, মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদরা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই`কেও লোকপালের আওতায় আনার দাবি তুলে বিল পেশে বাধা দেন।

তুমুল বিক্ষোভের কারণে প্রথমে বেলা দুটো পর্যন্ত সভা মুলতবি করে দেন স্পিকার মীরা কুমার।

ফের বেলা ৩টা পর্যন্ত মুলতবি হয়ে অধিবেশন শুরু হলে শেষ পর্যন্ত সরকারের তরফে এই দাবি বিবেচনা করে লোকপাল বিলের খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধনের সম্ভাবনার আশ্বাস দেওয়ার পর বিল পেশের সুযোগ মেলে।

এদিন নতুন লোকপাল বিল পেশের পাশাপাশি গত আগস্ট মাসে পেশ করা লোকপাল বিলটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

আগামী ২৭ তারিখ থেকে লোকপাল বিল নিয়ে সংসদে বিতর্ক হবে।

আবার ওই দিন থেকেই মুম্বাইয়ে তিন দিনের অনশন কর্মসূচির মাধ্যমে তৃতীয় দফার `লোকপাল আন্দোলন`-এর সূচনা করবেন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নেতা আন্না হাজারে।

অগাস্ট মাসে আন্না হাজারের আন্দোলনে বাধ্য হয়েই সংসদে পেশ হওয়া লোকপাল বিলটি প্রত্যাহারের কথা জানায় কেন্দ্রীয় সরকার।

বৃহস্পতিবার লোকসভায় পেশ হয়েছে নতুন লোকপাল বিল।

যে লোকপাল বিলটি সংসদে পেশ হয়েছে তাতে আন্না হাজারের আপত্তি এবং দাবিগুলোকে অনেকাংশেই অগ্রাহ্য করেছে সরকার এমনটাই দাবি করেছেন তিনি।

যেমন,শর্তসাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদকে লোকপালের আওতায় রাখা হয়েছে। বিদেশনীতি, পরমাণু শক্তি, মহাকাশ গবেষণা, আভ্যন্তরীণ ও বহির্দেশীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোতে প্রধানমন্ত্রীর পদ তদন্তের আওতায় আসবে না।

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করতে হলে নয় সদস্যের লোকপাল বেঞ্চের তিন চতুর্থাংশের ঐকমত্য চাই। তদন্ত ক্যামেরাবন্দি করা হবে না এবং অভিযোগ খারিজ হলে তার রেকর্ড প্রকাশ করা যাবে না।

লোকপালের আওতায় সিবিআইকে রাখা হয়নি। তবে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের রিপোর্ট লোকপালকে দেবে। সেই রিপোর্ট লোকপাল প্যানেলের অন্তত তিন সদস্য খতিয়ে দেখার পর চার্জশিট গঠন, খারিজ অথবা বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেবেন। চার্জশিট ফাইল হলে বিশেষ লোকপাল আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে।

লোকপালের আওতায় কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রুপ সি কর্মীরা আসবেন না। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করবে চিফ ভিজিলেন্স কমিশন। চিফ ভিজিলেন্স কমিশন তার রিপোর্ট দেবে লোকপালকে।

লোকপাল নিজের থেকে কোনও তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবে না। সেজন্য দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ লোকপালের কাছে জমা পড়তেই হবে।  

লোকপালকেও সংসদের কাছে দায়বদ্ধ রাখার চেষ্টা বিলে করা হয়েছে। লোকপাল প্যানেল হবে নয় সদস্যের। তাতে সংরক্ষণের প্রচলিত বিধি মানা হবে। প্যানেলের অর্ধেক সদস্যকে নেওয়া হবে বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্র থেকে।

লোকপাল প্যানেলের চেয়ারম্যানের মেয়াদ পাঁচ বছর। নিয়োগ করবে একটি বিশেষ কমিটি। কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার স্পিকার, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও দেশের প্রধান বিচারপতি। নির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে লোকপাল চেয়ারম্যানকে সংসদে ইমপিচ করা যাবে। সেক্ষেত্রে প্রস্তাবে ১০০ জন সাংসদের সই থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।