ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কর্পোরেট সংস্থা অন্তর্ভুক্ত করার সংশোধনী দেবে সিপিএম

সিনিযর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১১

নয়াদিল্লি: ভারতে প্রস্তাবিত লোকপাল বিলে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকেও অর্ন্তভুক্ত করা হোক, সংসদে এমন সংশোধনী আনতে চলছে বাম দল সিপিএম।

সিপিএম স‍ূত্রে জানা গেছে, তারা মনে করছেন, লোকপালের আওতায় আনতে হবে সেসব কর্পোরেট সংস্থা, যেগুলো দেশে বিপুল দুর্নীতিতে যুক্ত।

যারা লোপাট করেছে সরকারি অর্থ। তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে তারা যাতে কোনদিন আর সরকারি কোন কাজ বা পরিষেবার বরাত না পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। লোপাট হওয়া সব অর্থ আদায়ে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

মঙ্গলবার সংসদে শুরু হচ্ছে লোকপাল নিয়ে আলোচনা। ওই লোকপাল বিলে এই সংশোধনী আনছেন সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া।

সিপিএমের দাবি, ওই সংশোধনী পাস না হলে স্পষ্ট হবে কারা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্পোরেটদের পক্ষে রয়েছে। প্রয়োজনে এ নিয়ে ভোটাভুটিতে যেতে পারেন বামপন্থীরা।

এদিকে, শীতকালীন অধিবেশনের একেবারে শেষ দিনে পেশ হয়েছে সংসদে লোকপাল বিল।

আলোচনার জন্য তিনদিন বাড়ানো হয়েছে অধিবেশন। পুরানো বিল যা নিয়ে কয়েকদিন আগে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রিপোর্ট পেশ করেছিল তা নিয়ে বিতর্ক ছিল। ইতিমধ্যেই পুরানো ওই বিল বাতিল করে নতুন বিল পেশ করেছে কেন্দ্র।

এই বিলেও নানা অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দল বিজেপির। সিপিএম লোকপাল নিয়ে বহুদিন আগে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ নিয়ে লিখিত বক্তব্য জানিয়েছে।

মঙ্গলবার সিপিএমের সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি নয়াদিল্লিতে বাংলানিউজকে বলেছেন, দুর্নীতি রোধে শক্তিশালী লোকপালের আমরা দাবি করছি। একই সঙ্গে এতে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো যাতে দুর্বল না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

মাত্র তিন দিনের অধিবেশনে দুর্নীতি সংক্রান্ত মোট চারটি বিল আলোচনা ও পাস করানোর মতো সময় সংসদে দু’কক্ষে হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইয়েচুরি।

এদিকে সংসদে বিল নিয়ে আলোচনার দিনই আর এতে অনশনের কর্মসূচি নিয়েছে সমাজকর্মী আন্না হাজারে ও তার টিম। তাদের মতে যে লোকপাল কেন্দ্র পেশ করেছে তা দুর্নীতি রোধের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নয়।

লোকপাল বিল নিয়ে মঙ্গলবার প্রথমে লোকসভাতে আলোচনা শুরু হবে। এতে নির্দিষ্ট সংশোধনী ইতোমধ্যে জমা দিয়েছেন সিপিএম।

কর্পোরেটদের দুর্নীতি রুখতে নির্দিষ্টভাবে আইনী ব্যবস্থা রাখার পক্ষে সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। এতে লোকপালের ক্ষমতা অধ্যায়ে কর্পোরেট দুর্নীতির বিষয়টি যুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে।

সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যদি কোন কোম্পানি বা কোম্পানির মালিক বা ডিরেক্টররা দেখা যায় দেশের দুর্নীতি বিরোধী আইন অনুযায়ী তারা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত তবে ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার যেন ক্ষমতা দেওয়া হয় লোকপালকে।

যারা লোকপাল দ্বারা কালো তালিকাভুক্ত হলে সরকারের কোন বরাত বা পরিষেবা পাবে না। এতে সরকারের যে টাকা লোপাট করবে কর্পোরেট সংস্থা তা ঐ কর্পোরেট সংস্থার থেকে আদায় করার ক্ষমতা থাকবে লোকপালের। টাকা আদায়ে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্পোরেটদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা থাকবে লোকপালের।

লোকপালের এই নির্দেশ সরকার কার্যকর না করলে এক মাসের মধ্যে তা লোকপালকে জানাতে হবে। প্রয়োজনে আদালতের কাছে যাতে লোকপাল এই সুপারিশ বাতিল হলে যেতে পারে তার ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব রয়েছে সংশোধনীতে। লোকপাল বিল পাসের ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যস্তরে লোকায়ুক্ত গঠনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার লোকপালে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।