কলকাতা: আবার অধ্যক্ষ নিগ্রহ। এবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) ও ছাত্র পরিষদ (সিপি) সমর্থকদের আক্রমণে জ্ঞান হারালেন রামপুরহাট কলেজের অধ্যক্ষ শিবাশিস ব্যানার্জি।
কলেজেই প্রাথমিক শুশ্রুষার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কলেজে তফশিল জাতি ও উপজাতির মধ্যে ফর্ম বিলিকরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। এতে অধ্যক্ষকে নির্যাতন করা হয় এবং শাসান হয়। তাকে ঘেরাও করে রায়গঞ্জ করে দেব বলে হুমকি দিয়েছিল টিএমসিপি সদস্যরা। তার জীবন সংশয়ের কথাও তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানানোয় বুধবার কলেজেই চূড়ান্ত নিগ্রহ করা হয় ওই অধ্যক্ষকে।
তারপরই এদিন মারমুখি হয়ে ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের কর্মীরা। তারা অধ্যক্ষ্যকে ঘেরাও করে হুমকি দেন। এতে তিনি আতঙ্কিত হয়ে সংজ্ঞাহীন হন। ঘটনার পরে পুলিশকে সেখানে দেখা যায়নি।
এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা।
সাহিত্যিক নবারুণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘লুম্পেনরাজ চলছে। খোলা গলায় প্রতিবাদ করছি। দোষীদের গ্রেফতার করা উচিত। ’
নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলেন, ‘রায়গঞ্জের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী শিথিল অবস্থান নেওয়ায় এই ঘটনা ঘটল। ’
লেখিকা সুচিত্রা ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঘটনার নিন্দার ভাষা নেই। ছাত্রছাত্রীরা ভাবলেশহীন দেখে আশ্চর্য লাগছে। ’
সাহিত্যিক সুনীল গাঙ্গুলি বলেন, ‘এরপর আর কেউ অধ্যক্ষ হতে চাইবেন না। ’
এই ঘটনায় রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিষ ব্যানার্জি বলেছেন, ‘ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। তৃণমূলকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে। অধ্যক্ষ নাটক করেছেন। তিনি সিপিএম করেন। ’
ঠিক একইরকমের কথা এদিন মহাকরণে বলেছেন রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘ওনি দলতন্ত্রে বিশ্বাসী। তার বিরুদ্ধে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ আছে। কিস্তু তা সত্বেও ঘটনার তদন্ত হবে। এসপিকে নির্দেশ দেওয়া হবে। ’
রামপুরহাটের ঘটনায় রায়গঞ্জ কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকার বলেন, ‘এসব ঠিক হচ্ছে না। এরকম করলে কেউ শিক্ষকতায় আসতে চাইবেন না। ’
উল্লেখ্য,কলেজে কলেজে এই সংঘর্ষ ও অধ্যক্ষ নির্যাতন বন্ধ করতে ১৭ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ছাত্র ইউনিয়ানের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা করার কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১২