কলকাতা: ভারতের বঙ্গোপসাগরের জলসীমায় শেষ ভূখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর দ্বীপের মেলায় মকর সংক্রান্তির স্নান সারতে আসা যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়েছে সাগর সৈকতে। প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটেছে এতে।
গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণের সর্বত্রই যাত্রীদের দীর্ঘ সারি, ভিড়। শনিবার সকাল পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যাত্রীদের ভিড়।
কলকাতা থেকে কচুবেড়িয়া, লট ৮, ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে আসা যাত্রীদের যে চাপ তাতে আরও প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী শনিবার রাতেই গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন। মকর সংক্রান্তির স্নান সারতে আসা যাত্রীদের ভিড় আছড়ে পড়েছে সাগরের জলে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রায় ৩ লাখ মানুষের সমাগম হলেও প্রায় লক্ষাধিক যাত্রী ইতিধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলা থেকে রওনা দিয়েছেন সাগর স্নান সেরে।
সরকারি তথ্যানুযায়ী, শনিবার গঙ্গাসাগর মেলায় আসা দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মধ্য প্রদেশের গোয়ালিয়ারের বাসিন্দা যশোরাম (৮০) এবং উত্তর প্রদেশের হরদোইয়ের বাসিন্দা ওমপ্রকাশ যাদব (৬৬) নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।
পেটের অসুখে এপর্যন্ত মোট ১৪৬ জন যাত্রী অসুস্থ হলে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণের হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা করা হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগ যাত্রীকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৭ জন যাত্রীকে অ্যাজমা, পেটের অসুখের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রঙ-বেরঙের আলো গোটা মেলা প্রাঙ্গণে। গঙ্গাসাগরে প্রচলিত বিদ্যুতের আলো জ্বলছে শুনে হতবাক হয়েছেন বহু যাত্রী। যাত্রীশেড থাকলেও শনিবার খোলা আকাশের নিচেই গঙ্গাসাগরের কনকনে ঠাণ্ডা, রাতের কুয়াশা আচ্ছন্ন মেলা প্রাঙ্গণে রাত কাটিয়েছেন যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, যাত্রী আবাসে থাকার জন্য স্থানীয় দালালদের একটি অংশ ৫০০-৬০০ টাকা দাবি করেছে। প্রশাসনিক নজরদারির মধ্যেই বহাল তবিয়তে দালালরা টাকা আদায় করেছে যাত্রীদের কাছ থেকে। সূচনা কেন্দ্র থেকে এনিয়ে মাইক্রোফোনে যাত্রীদের টাকা না দেওয়ার আবেদন জানানো হলেও অসাধু এই লোকজনদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিস প্রশাসন।
রোববার ভোরের মাহেন্দ্রক্ষণে পূণার্থীদের মকর স্নানের মধ্যে দিয়ে এই বছরে মতো মেলা শেষ হয়েছে বলে প্রশাসনিকভাবে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ১১১৪ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১২