ঢাকা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়ার পরও গত অর্থবছরে রপ্তানি আয় আগের অর্থ বছরের তুলনায় ৩৪.৩৮ শতাংশ বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্ন উত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য বেনজীর আহমদের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়ার পরও ২০২১-২২ অর্থবছরে আমাদের রপ্তানি আয় হয়েছে ৫২.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ৩৪.৩৮ শতাংশ বেশি। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) মতে ২০২২ সালে বিশ্ব পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ৩.৫ শতাংশ হবে এবং ২০২৩ সালে ১.০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১১.৭৫ শতাংশ বেড়ে ২০.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যে এই গতিশীলতা চলমান এবং আরও বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের স্থান সুদৃঢ় করতে বর্তমানে রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। রপ্তানি পণ্যের বাজার বহুমুখী করতে নতুন বাজার সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে ব্রাজিল, সিআইএসভুক্ত দেশ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেওয়া হচ্ছে। ৪৩টি পণ্য ও সেবা খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাণিজ্য মেলার আয়োজন ও বিদেশস্থ বাণিজ্য মেলায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে রপ্তানিপণ্যের পরিচিতিকরণ ও ক্রেতা অন্বেষণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাণিজ্য মিশন পাঠানোর মাধ্যমে তথ্য বিনিময় করা ও বাণিজ্য বাধা দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি বাড়াতে আলোচনা অব্যাহত আছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইথিওপিয়া, মালয়েশিয়া, হংকং, রাশিয়া এবং নাইজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে দেশের পণ্যের বাজার অন্বেষণ ও ইমেজ বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, জাপান, সিংগাপুর, কানাডা, চীন, মালয়েশিয়া এবং আসিয়ান অর্থনৈতিক জোট, মার্কসুর জোট ও ইউরেশিয়া অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করে শুষ্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, পোল্যান্ড, বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত থিম ভিত্তিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে দেশের পণ্যের বাজার অন্বেষণ ও ইমেজ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রপ্তানি বাণিজ্য আরও বাড়াতে সরকারের পদক্ষেপগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এসকে/এমএমজেড