ঢাকা: কার্নেট সুবিধার বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ। দীর্ঘদিন ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ব্যবহার করেছেন মালিক।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর কার্নেট সুবিধার অপব্যবহার করা ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বরপ্লেট ব্যবহার করা এমন একটি বিএমডব্লিউ জব্দ করেছে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টায় রাজধানীর মিরপুর দারুসসালামের ১৬/১, আনন্দনগর মো. শহীদুল্লাহের বাসার নিচতলার গ্যারেজ থেকে জব্দ করা হয়।
বিকেলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের উপ-পরিচালক এইচ এম শরিফুল হাসান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শরিফুল হাসানের ভাষ্যমতে, তিন সপ্তাহ আগে গোপন সংবাদে জানা যায়, মিরপুর এলাকায় কার্নেট সুবিধার অপব্যবহার করা একটি বিএমডব্লিউ রয়েছে।
৩ হাজার সিসি, ৭৩০ লি ২০০৬ মডেলের নীল রঙের কোটি টাকা মূল্যের গাড়িটি মিরপুর দারুস সালামের মো. শহীদুল্লাহের বাসার নিচতলার গ্যারেজে নজরদারি শুরু হয়।
দীর্ঘ যাচাই শেষে মঙ্গলবার অভিযানে ওই গ্যারেজ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি জব্দ করা হয়। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার ফলে গাড়িটি প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে।
মো. শহীদুল্লাহ জানিয়েছেন, গত ৩ সপ্তাহ আগে তার বন্ধু রুপেন গাড়িটি মেরামতের কথা বলে রেখে গেছেন। এরপর আর নিতে আসেননি। গাড়িটি ধুলাবালি পড়ে গেছে।
রুপেনের বাসায় নিজস্ব গ্যারেজে বিএমডব্লিউ, লেক্সাসসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি থাকলেও কেন গাড়িটি এখানে রেখে গেছেন তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
হাসান আরো বলেন, গুলশান-১ এলাকার মো. রুপেন নামে একজন ব্যবসায়ী গাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেট্টো ভ ১১-১৩৬৩ ডিজিটাল নম্বরপ্লেটে গাড়িটি ব্যবহার করছেন।
গাবতলী এলাকায় ঈপ্সিতা ট্রেডার্স নামে একটি কয়লার বড় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রুপেনের মোবাইল নম্বর ও প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাসার ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
বিআরটিএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ১৯৯২ মডেল, ২৫০০ সিসি ও WBAHC120303430498চেসিস দেখিয়ে ২০০৯ সালে এএম ফারুক এ রেজিস্ট্রেশন নেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের ১৯৯৬ সালের ৫ আগস্টের বিল অব এন্ট্রি (নম্বর ১৫৫৪০) অনুযায়ী গাড়িটি এএম ফারুক নামে এক ব্যক্তি কার্নেট সুবিধায় আমদানি করেছেন।
রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী, এ নম্বরপ্লেটের গাড়ির মালিক উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টর, রোড ২১, বাড়ি-২৫, মরহুম এএম ফখরুদ্দীনের পুত্র এএম ফারুক।
গাড়িটি ৩ হাজার সিসির হলেও রেজিস্ট্রেশনে ২৫০০ সিসি দেখানো হয়েছে। চেসিস তুলে ভুয়া চেসিস নম্বর ও মডেল ২০০৬ হলেও ১৯৯২ দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়।
হাসানের ভাষ্যমতে, ১৯৯৬ সালে কার্নেট সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করা হলেও ফেরত নেওয়া হয়নি। পরে ব্যবসায়ী রুপেনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ী রুপেন দীর্ঘদিন থেকে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন ও নম্বরপ্লেটে গাড়িটি ব্যবহার করছেন। সম্প্রতি অবৈধ কার্নেট সুবিধার গাড়ি জব্দের অভিযানে গাড়িটি গ্যারেজে লুকিয়ে রাখা হয়।
শুল্কসহ গাড়ির মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। গাড়ির মালিক রুপেনকে আটকের চেষ্টা ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান শরিফুল হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৬
আরইউ/এএসআর