ঢাকা, রবিবার, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বছরের প্রথম দিনই নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
বছরের প্রথম দিনই নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী: বছরের প্রথম দিনই নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১ জানুয়ারি) সকাল থেকেই স্কুলে স্কুলে ছিল উৎসবের আমেজ।

বছরের শুরুতেই রাজশাহীর স্কুলগুলোতে নতুন বই পেয়ে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। রঙিন মলাটের চকচকে বই হাতে পেয়ে এ সময় প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে।  

সকালে রাজশাহীর শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. গোলাম মাওলাসহ আরএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নতুন বই হাতে নিয়ে সিরাজুম মুনিরা নামে এক শিক্ষার্থী বলে, নতুন বই পেলাম, ডায়েরি পেলাম। অনেক ভালো লাগছে। পড়ালেখা করবো।  

তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী পাপিয়া জানায়, বই পেয়ে তার ভালো লাগছে।

আর অভিভাবকরা জানিয়েছেন, নতুন বই পেয়ে পড়ালেখায় মনোযোগী হবে তাদের সন্তানরা। সুশিক্ষা নিয়ে দেশপ্রেম ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে এ শিক্ষার্থীরা কাজ করবে বলেও প্রত্যাশা করছেন অভিভাবকরা।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে শুরুতেই সবাইকে ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান রাসিক মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের মধ্যে একটা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের নাগরিকদের আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে, দেশকে আরও ওপরে নিয়ে যাবে, সেই সমস্ত শিশুদের মধ্যে নতুন বই বিতরণ; সে যেখানেই থাকুক, পার্বত্য চট্টগ্রামই হোক, সন্দীপ-হাতিয়া, ভোলা দ্বীপ এলাকায় হোক অথবা আমাদের সমতল ভূমিতে হোক, সর্বত্রই কিন্তু এ দিনটিতে বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

লিটন বলেন, এ উদাহরণ কোথাও কোনো দেশে আছে বলে আমি জানি না, নেই বলেই আমি জানি। সেই কাজটি তিনি করেছেন এবং তিনি প্রমাণ করেছেন।

এদিকে সকালে রাজশাহী পবা উপজেলার দামকুড়াথানার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও বই উৎসব হচ্ছে। স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক সবাই বই উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছেন। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনই ঝকঝকে নতুন পাঠ্যবই হাতে পেয়ে দারুণ খুশি স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।

মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. নাজনীন নাহার বলেন, বই উৎসবকে প্রাণবন্ত করতে সকাল থেকেই তাদের প্রস্তুতি ছিল। সব শিক্ষার্থীরাও স্কুলে আসতে থাকে। বেলা ১১টার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ করা হয়।

স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. নিরাবুল ইসলাম বলেন, নতুন বই মানেই উৎসবের আমেজ। সকাল থেকেই নব উচ্ছ্বাস নিয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসে। উৎসবের আমেজে মেতে উঠে।  

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সকাল থেকেই রাজশাহীর স্কুলে স্কুলে বই উৎসব হচ্ছে। আনন্দমুখর পরিবেশে বই বিতরণ করা হচ্ছে।  

তিনি জানান, রাজশাহীতে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ২০২৪ সালে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ২৮৮ জন। এ বছর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ ৩৬৬টি বই বিতরণ করা হবে। রাজশাহীর ১ হাজার ৫৭টি সরকারি ও ৮৭৮টি বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বই বিতরণ করা হবে। আজ থেকে বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলো।

এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলা ভার্সনে আজ ১৮ লাখ ১৫ হাজার ১২১টি, এসএসসি ভোকেশনাল পর্যায়ে ৮০ হাজার ৭০০টি, ভোকেশনাল ট্রেড ২৮ হাজার ৭০০ ও ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার ১০০টি বই বিতরণ করা হবে, যা মোট বরাদ্দের ৬৪ শতাংশ, ৫৪ শতাংশ, ৪০ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশ। এ ছাড়া ইবতেদায়ী পর্যায়ে শতভাগ ও দাখিল পর্যায়ে ৫৮ শতাংশ বই বিতরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৪
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।