ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিক্ষা

বরিশাল বোর্ডে মেয়েরা এগিয়ে, ১২ কলেজ পাস শূন্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:২২, অক্টোবর ১৬, ২০২৫
বরিশাল বোর্ডে মেয়েরা এগিয়ে, ১২ কলেজ পাস শূন্য

বরিশাল বোর্ডে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফলে বড় ধরনের ধস নেমেছে। গত বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুটোই কমেছে।

এবার বোর্ডের অধীনে ১২টি কলেজ থেকে কোনো পরীক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। বিভাগে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাস বেশি।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বোর্ডের ৩৪৯টি কলেজের ৩৭ হাজার ৬৬ জন শিক্ষার্থী ১৪৪টি কেন্দ্রে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ১২টি কলেজের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। বিপরীতে মাত্র দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শতভাগ পাস করেছে।

যে ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি, সেগুলো হলো— বরগুনার বামনা সরকারি সারওয়ারজান পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বরিশাল সদরের কমার্স কলেজ, বাবুগঞ্জের মোহনগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেহেন্দিগঞ্জের আন্ধারমানিক ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলার বোরহানউদ্দিনের দেলুয়া তালুকদার বাড়ি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালমোহনের বালুরচর দালাল বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলা সদরের ভাষা শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় ও মেদুয়া কলেজ, ঝালকাঠির নলছিটির রাঙ্গাপাশা সেকেন্ডারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং আব্দুস সালাম কলেজ, পটুয়াখালী সদরের আউলিয়াপুর সাবিনা আক্তার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও দুমকি উপজেলার দুমকি নাছিমা কেয়ামত আলী মহিলা কলেজ।

বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারে ৫০ শতাংশের ওপরে পরীক্ষার্থী পাস করেছে ১৯৭টি কলেজে। ৫০ শতাংশের নিচে পাস করেছে ১৩৮টি কলেজে। এর মধ্যে ২০ শতাংশের নিচে পাস করেছে ৬টি, ১৫ শতাংশের নিচে ৬টি এবং ১০ শতাংশের নিচে দুটি কলেজ।

বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, ২০২৪ সালে যেখানে গড় পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, সেখানে এবারে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৫৭ শতাংশে। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ১৬৭ জন, এবার পেয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৭৪ জন— যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় আড়াই হাজার কম।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর জি. এম. শহীদুল ইসলাম জানান, আগের ধারাবাহিকতায় এবারও মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে ভালো ফল করেছে। দুই লিঙ্গের পাস হারের ব্যবধান ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।

ফলাফলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগ সবচেয়ে ভালো করেছে। এ বিভাগে পাসের হার ৭১ দশমিক ৫৮ শতাংশ, এবং সর্বোচ্চ ৮০৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে ৪৮২ জন মেয়ে এবং ৩২৪ জন ছেলে।

মানবিক বিভাগে পাসের হার ৬০ দশমিক ২১ শতাংশ। এই বিভাগে ৭৭৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে— এর মধ্যে ৬৬৬ জন মেয়ে, মাত্র ১১১ জন ছেলে।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৬২ দশমিক ০৪ শতাংশ। এ বিভাগে মোট ৯১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে, যার মধ্যে ৬৯ জন মেয়ে এবং ২২ জন ছেলে।

তিন বিভাগ মিলিয়ে দেখা গেছে, মেয়েদের সামগ্রিক পাসের হার ৭১ দশমিক ৪১ শতাংশ, যেখানে ছেলেদের পাসের হার ৫২ দশমিক ৬০ শতাংশ। সংখ্যার হিসেবে মোট ২২ হাজার ৪২৪ জন মেয়ে এবং ১৪ হাজার ৬৪২ জন ছেলে পাস করেছে।

এ বছর বরিশাল বোর্ডের অধীনে ৩৪৯টি কলেজের ৬১ হাজার ৪৮১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৫৯ হাজার ২৩৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৩৭ হাজার ৬৬ জন।

এছাড়া পরীক্ষাকালে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ১৮ জন ছেলে ও ১৪ জন মেয়ে পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।