ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ফাঁস রোধে অ্যালুমিনিয়ামের খামে প্রশ্ন, তীক্ষ্ণ নজরদারি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
ফাঁস রোধে অ্যালুমিনিয়ামের খামে প্রশ্ন, তীক্ষ্ণ নজরদারি সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির মিটিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ অন্যরা

ঢাকা: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানে এবার নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তার জন্য অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলের খাম ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ক্ষেত্রে তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারিও থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষামন্ত্রী।
 
আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে রোববার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে মন্ত্রী একথা জানান।


 
শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৭ জন ও পরীক্ষা কেন্দ্র সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৪টি। দাখিলে মোট পরীক্ষার্থী ৩ লাখ ১০ হাজার ১১৭২ জন ও মোট কেন্দ্র ৭১১টি। আর কারিগরিতে মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জন ও কেন্দ্র ৭৫৯টি।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার দিন পর্যন্ত কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকবে। এ হিসেবে ২৭ জানুয়ারি থেকে এবারও কোচিং সেন্টার ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ।
 
গতবছর সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তার ফলে কোনো প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে দীপু মনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা নিয়ে এবারের পরীক্ষাও যেন সুষ্ঠু পরিবেশে হয় এবং কোনো ধরনের প্রশ্নফাঁসের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সব ব্যবস্থা নিয়েছি।
 
‘এবার নিরাপত্তার খাম অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে, যেটি নিশ্চিত করবে খামটি একেবারেই খোলা হয়নি। পরীক্ষার হলে যখন খোলবার কথা তার আগে খোলা হয়নি সেটি নিশ্চিত করবে। ’
 
তিনি আরো বলেন, অতীতে যতটা না প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি গুজব রটনার ঘটনা ঘটেছে। কাজেই আমরা প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী বা গুজব রটনাকারী যদি কেউ থাকে কোনোভাবে এটি যদি শনাক্ত হয় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
 
‘ইতোমধ্যেই তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু হয়ে গেছে। কাজেই প্রতিটি পর্যায়ের সঙ্গে কোনোভাবেই কেউ যুক্ত থাকুন না কেন, যারা সম্ভাব্য বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনাগুলো অতীতে ঘটতে দেখেছি। সে সমস্ত জায়গায় তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে আমরাকঠিন ব্যবস্থা নেবো। ’
 
নতুন সরকারের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই দেশে জঙ্গি দমন করতে পেরেছি। মাদককে দমন করবার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কাজেই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস… যেগুলো দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের শিক্ষাজীবন নষ্ট করার অপচেষ্টা চালায় তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেবো। আশা করি কেউ কোনোভাবেই এর সঙ্গে যুক্ত হবেন না।
 
দীপু মনি বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না, তিনি যেই হোন না কেন। যারা প্রশ্নপত্র বহন করে নিয়ে যান তারাও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্রসচিব একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন, যেটিতে কোনো ধরনের ছবি তোলা যাবে না বা ইন্টারনেট সংযোগ নেই। কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে অত্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
এবারও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই হলে প্রবশে করতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এরপরে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। যদি অনিবার্য কারণবশত হয় সেক্ষেত্রে তাদের নাম, রোল, প্রবেশের সময়, দেরি হওয়ার কারণসহ সমস্ত কিছু রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাবোর্ডে পাঠাতে হবে।  
 
ফেসবুকে গুজব রুখতে পদক্ষেপ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, গুজব রটনা প্রতিরোধে বিটিআরসি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সেল দায়িত্ব পালন করবে। সচেতনতামূলক তথ্য গণমাধ্যমের সহায়তার প্রচার করা হবে।
 
পরীক্ষার্থীদের সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার আগে কোথাও প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় কিনা- এ ধরনের সন্ধানে সময় নষ্ট করবেন না। কোনো অভিভাবক এ ধরনের অন্যায় প্রশ্রয় দেবেন না।
 
পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশের ১৪৪ ধারা জারি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
 
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, ঢাকা মহানগরীতে কেন্দ্র বিন্যাসের ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক পরিবর্তন করে ফেলেছি। গত দুই বছরে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি যেখানে পরীক্ষা দিয়েছে আমরা সেখানে অধিকাংশই পরিবর্তন করে দিয়েছি যেখানে সম্ভাব্য কেন্দ্র পাওয়া গেছে। অনেক জায়গায় কেন্দ্র পাওয়া যায়নি সেগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।