ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নৌকাকে জেতাতে একাট্টা আ.লীগ-বিএনপি-জমিয়ত!

উপজেলা করেস্পন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
নৌকাকে জেতাতে একাট্টা আ.লীগ-বিএনপি-জমিয়ত!

কেরানীগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ঠেকাতে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, হেফাজতসহ একাধিক দল। দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা দফায় দফায় বৈঠক করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল হোসেনকে (হাদী) ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন।

নৌকার প্রার্থী মজিবর রহমান নৌকার জন্য নয়, নিজের জন্য ভোট চাচ্ছেন।   তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, হেফাজত ও জমিয়ত নেতারা বলছেন এটা স্থানীয় নির্বাচন এবং এলাকার মানুষের ভালোবাসার মেলবন্ধন।

আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে একই মঞ্চে সচারাচর দেখা না গেলেও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ৩ নং রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেখা গেছে ব্যতিক্রমী এমন দৃশ্য। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নবীন সদস্য মজিবুর রহমান। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি প্রচারণার মাঠে রয়েছেন।

নৌকার সমর্থনে ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজার, রাজানগর বাজারসহ বেশ কিছু নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখার পাশাপাশি ভোট চাইতে দেখা গেছে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সিরাজদিখান থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক্ এবং ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন খান খোকন, বিএনপি নেতা ফরহাদ হোসেন বুলেট, যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম বাপ্পী, জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নাফিস আহমেদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের।

বিএনপি নেতা জসিম বলেন, আমাদের পুরো ইউনিয়নের ভালমন্দ চিন্তা করতে হবে, আমাদের সুযোগ সুবিধা দেখতে হবে, তাই এলাকাবাসীর কাছে অনুরোধ থাকবে আমরা দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের পরিক্ষিত সৈনিক মজিবর রহমানকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করব।

এর আগে ২০১৬ সালে মজিবুর রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেমকে পরাজিত করে প্রথমবারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত ২০১৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রিয়াজ চৌধুরীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামাল হোসেন (হাদী)

নির্বাচনের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আওয়ামী লীগ কামাল হোসেন হাদীকে মোকাবিলায় এবার বিএনপির সঙ্গে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছে। দফায় দফায় উভয় দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা আলোচনায় বসছেন। নৌকার সমর্থনে অবস্থান নিয়েছেন আলেম ওলামারাও। ‘আলেম ওলামার সালাম নিন, নৌকা মার্কা ভোট দিন’, ‘জসিম -স্বপন ভাইয়ের সালাম নিন, নৌকা মার্কা ভোট দিন’ সহ নানা স্লোগানে মুখরিত এখন রাজানগর সৈয়দপুরের মাঠ-ঘাট।

এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবু তৈয়ব সনেট, বলেন, আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক, আমরা কোনমতেই নৌকার জন্য ভোট চাইতে পারি না। আমার সিনিয়র নেতারা নৌকার জন্য ভোট চাচ্ছেন আসলেই এটা লজ্জাজনক। আমার নেত্রী আমার মা, সে যখন মৃত্যুর মুখে তখন কী করে সিনিয়র নেতারা নৌকার পক্ষে ভোট চান?

সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ধীরন বলেন, আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করেছি, যেখানে আমরা নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছি না সেখানে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। মৌখিকভাবে নেতাকর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে সব জায়গায় নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। যেসব নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে কাজ করছেন দল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

এ ব্যাপারে জসিম উদ্দিন খান খোকনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।