ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন সের্হিও বুসকেতস। ইন্টার মায়ামির হয়ে চলতি এমএলএস মৌসুমই হবে তার শেষ মৌসুম।
৩৭ বছর বয়সী এই তারকা বৃহস্পতিবার এক আবেগঘন ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি মনে করি সময় এসেছে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানানোর। প্রায় ২০ বছর ধরে যে অসাধারণ যাত্রাটা উপভোগ করেছি, তা ছিল আমার স্বপ্ন পূরণের গল্প। ’
বার্সেলোনার হয়ে বুসকেতস খেলেছেন ৭২২ ম্যাচ, যা ক্লাবের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এই সময় তিনি জিতেছেন ৩২টি ট্রফি—এর মধ্যে ৯টি লা লিগা, ৭টি কোপা দেল রে এবং ৩টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। পুরো ক্যারিয়ারে তার ট্রফি সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬-এ।
স্পেন জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছেন ১৪৩ ম্যাচ। ছিলেন ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ও ২০১২ সালের ইউরো জয়ী দলের মূল স্তম্ভ। দুটি টুর্নামেন্টেই তিনি খেলেছেন প্রতিটি মিনিট। কাতার বিশ্বকাপ শেষে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান তিনি।
পেপ গার্দিওলার হাত ধরে নিজের অবস্থানকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যান বুসকেতস। সাবেক স্পেন কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কে একবার বলেছিলেন, ‘আজ যদি আমি খেলোয়াড় হতে পারতাম, আমি হতে চাইতাম বুসকেটস। ’
তার খেলায় ছিল অসাধারণ পজিশনাল ইন্টেলিজেন্স, চাপের মধ্যে বল ধরে রাখার ক্ষমতা ও ডিফেন্স থেকে আক্রমণে রূপান্তরের শিল্প। এ কারণেই ফুটবল দুনিয়ায় প্রচলিত একটি উক্তি হলো, ‘গেম দেখলে বুসকেটসকে দেখা যায় না; বুসকেটসকে দেখলে পুরো গেম দেখা যায়। ’
২০২৩ সালের জুলাইয়ে লিওনেল মেসি ও জর্দি আলবার সঙ্গে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন তিনি। ত্রয়ী একসঙ্গে ক্লাবের প্রথম ট্রফি, লিগস কাপ জিততে সাহায্য করে। ২০২৪ সালে বুসকেতস খেলেন সর্বাধিক মিনিট, দলকে এনে দেন প্রথম সাপোর্টার্স শিল্ড।
বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার সিটির কিংবদন্তি কোচ পেপ গার্দিওলা একবার তাকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাসে পাওয়া অন্যতম সেরা প্রতিভা। প্রথমবার ওকে দেখে আমি বন্ধুকে বলেছিলাম, আমি এক বিলুপ্ত প্রজাতির খেলোয়াড় দেখলাম। ’
ক্যারিয়ারের ইতি টানলেও ফুটবলের কৌশলগত অভিধানে বুসকেতসের নাম অমর হয়ে থাকবে। ডিপ-লাইং প্লেমেকার পজিশনকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে গেছেন তিনি। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে এক স্বর্ণযুগের পরিসমাপ্তি ঘটলেও উত্তরাধিকার অম্লান থাকবে যুগ যুগ ধরে।
এমএইচএম