ইসরায়েলি প্রিমিয়ার লিগের বহুল প্রতীক্ষিত ডার্বি ম্যাচটি পরিণত হলো বিশৃঙ্খলায়। রোববার রাতে তেল আবিবে মাকাবি তেল আবিব ও হাপোয়েল তেল আবিবের মধ্যকার ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর আগেই বাতিল ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে ‘দাঙ্গা’। ইসরায়েলি পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ডজনখানেক ধোঁয়া গ্রেনেড ও আতশবাজি ছোঁড়া হয়েছে। এটি কোনো ফুটবল ম্যাচ ছিল না, বরং এটি ছিল বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা। ’
এ ঘটনায় অন্তত ১২ জন সাধারণ নাগরিক ও ৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ৯ জনকে, আরও ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত ম্যাচ শুরুর আগেই, যখন দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ম্যাচটি বাতিল করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
হাপোয়েল তেল আবিব ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে। ক্লাবটি পুলিশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায়, ‘এটি কোনো ক্রীড়া আয়োজন নয়, বরং ছিল যুদ্ধের প্রস্তুতি। ইসরায়েল পুলিশ এখন যেন দেশের খেলাধুলারও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। ’
অন্যদিকে মাকাবি তেল আবিব এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য না করলেও ক্লাবটি ম্যাচ বাতিলের খবর নিশ্চিত করেছে।
এই সহিংসতার ঘটনাটি এমন সময়ে ঘটল, যখন ইংল্যান্ডেও মাকাবি তেল আবিবের নিরাপত্তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে। আগামী ৬ নভেম্বর ইউরোপা লিগে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ম্যাচে মাকাবি সমর্থকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বার্মিংহামের সেফটি অ্যাডভাইজরি গ্রুপ। তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ ও সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তারা কাজ করছে এবং নিরাপত্তা জোরদারে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
অ্যাস্টন ভিলা তাদের ম্যাচডে স্টুয়ার্ডদের জানিয়েছে, কেউ চাইলে ওই ম্যাচে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে পারবেন। ক্লাবের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বুঝতে পারি, কেউ কেউ এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। ’ ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিশ অবশ্য এসএজির সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিয়েছে এবং ম্যাচটিকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ইউরোপা লিগে আয়াক্স বনাম মাকাবি তেল আবিব ম্যাচের সময় আমস্টারডামে সহিংস সংঘর্ষ ও অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অঙ্গনেও। ইসরায়েল যখন নরওয়ে ও ইতালির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলেছে, তখনও বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে। রবিবারের এই তেল আবিব ডার্বি ছিল ইসরায়েলি লিগ মৌসুমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।
আরইউ