ঢাকা: ‘ভাল হওয়ার নয়’ এমন রোগীদের সেবা দিচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা প্রশমন চিকিৎসা সেবা নামে এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ‘ভাল হওয়ার নয়’ এমন রোগী এবং তার পরিবারকে চিকিৎসা সেবা ও সহযোগিতা দেওয়ার মাধ্যমে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার আওতায় নিয়ে আসা।
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউ’র মিল্টন হলে এ কল্যাণকর ধারণাটি সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ‘প্যালেয়েটিভ কেয়ার ও এর প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক’ মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত ও ড. নিজামউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। তারা প্যালিয়েটিভ সেবার প্রয়োজনীয়তা ও করণীয় বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন।
জনগণের মাঝে প্যালিয়েটিভ সেবার গুরুত্ব তুলে ধরে ‘বন্ধু তোমার হাতটা বাড়াও’ শীর্ষক থিম সং পরিবেশন করে সেসাইটি ফর মিউজিক্যাল ব্যান্ডস ইন বাংলাদেশ।
বক্তারা অনুষ্ঠানে বলেন, পৃথিবীতে ৭শ’ কোটির মধ্যে প্রতিবছর আনুমানিক সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে সাড়ে তিন কোটি মানুষের মৃত্যুপূর্ব ব্যথামুক্তি ও অন্যান্য চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন পড়ে। একটি তথ্যে ২০০৭ সালে গোটা বিশ্বে শুধু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৭০ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে ৭০ ভাগ মানুষকে মৃত্যুর আগে একটি দীর্ঘ সময় ভুগতে হয়েছে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা। মৃত্যু এসে মুক্তি দিয়েছে তাদের। অথচ অল্প প্রশিক্ষণেই সেবা ও সহযোগিতা দিয়ে এ ধরনের রোগীর ব্যথাহীন মৃত্যু নিশ্চিত করা সম্ভব। যেমন শ্বাস কষ্টে আরাম দেওয়া কিংবা দু্র্গন্ধযুক্ত ক্ষতস্থান পরিষ্কার করা।
তারা বলেন, প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মতে, কিছুই করার নেই একটি ভুল ও পলায়নপর মনোবৃত্তি। মানবিক দায়িত্ব হিসেবে কিছু না কিছু নিশ্চয় করার থাকে। এ ধরনের রোগীদের বেঁচে থাকার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চিকিৎসা বা সমাজসেবা ব্যবস্থায় পরিচর্যা করতে হবে। ওদের কষ্ট ও সমস্যা দূর করতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
বিএসএমএমইউ’র সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার ২০১১ সালে যাত্রা শুরুর দিন থেকেই নিয়মিতভাবে নিরাময় অযোগ্য রোগীর চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ সেবা ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিয়ে সব সদস্য রাষ্ট্রকে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে এটি অন্তর্ভুক্ত করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫