ঢাকা: ভালো খাদ্যতালিকা সুস্বাস্থ্যের প্রধান চাবিকাঠি। আমরা কী খাচ্ছি তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আমাদের শরীর, মন ও হৃদপিণ্ডের গঠনে।
আর এই আচরণত পরিবর্তনে শিশুকালের খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীর গঠনের সময়ের খাবার আচরণগত পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা শেষে একথাই বলছেন গবেষকরা।
গবেষণা অনুযায়ী, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার আচরণত পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি সাধারণত পাওয়া যায় মাছের তেলে। এই তেল শিশুর অসামাজিক ও বিরূপ আচরণ কমাতে সাহায্য করে। শিশুদের আচরণগত সমস্যা কমানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার হলো সবচেয়ে কার্যকরী সমাধান। জানান, পেনিনসিলভেনিয়া স্কুল অব নিউট্রিশিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক জিয়াংহং লিউ।
ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আসলে এটি এমন এক ধরনের চর্বি জাতীয় পদার্থ যেটি কমানো যায় না। ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিডের উদ্ভিদভিত্তিক উৎস হলো বাদাম, খাদ্যবীজ এবং ঠাণ্ডাপানির তৈলাক্ত মাছ- যেমন সালমন, হেরিং, ম্যাককেরেল, সার্ডিন। এগুলো খুবই কার্যকরী উপাদান।
গবেষণার সময় আট থেকে ১৬ বছর বয়সী একশো শিশুকে ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ বিশেষ ধরনের পানীয় টানা ছয় মাস দিনে একবার করে পান করতে দেওয়া হয়। গবেষক দল একইসঙ্গে অন্য একশো শিশুকে একইসঙ্গে দিনে একবার পানীয় পান করালেও তাতে ওমেগা-থ্রির কোনো উপাদন ছিলো না।
এসব শিশুর বাবা-মা জানান, তাদের সন্তান বিরূপ বহিরাগত অসামাজিক আচরণ যেমন, মারামারি করা, মিথ্যা বলতো এবং অভ্যন্তরীণ আচরণ যেমন, বিষণ্নতা, উদ্বিগ্নতা ও নিজেকে অন্যদের থেকে দূরে রাখতো।
ছয় মাস পর উভয় দলই তাদের সন্তানদের বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ আচরণে উন্নতি লক্ষ্য করা যায় বলে জানান অ্যাড্রিয়ান রাইন।
কিন্তু ১২ মাস পর কী ঘটলো, এটা জানা ছিলো খুবই আকর্ষণীয় বিষয়।
ছয়মাস পর গবেষকরা মূল জায়গায় ফিরে এলেন, যখন ওমেগা-থ্রি গ্রুপের শিশুদের খুব বেশি উন্নতি হচ্ছিলো না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো ১২ মাস পর ওমেগা-থ্রি গ্রুপের শিশুদের বহির্মুখী আচরণগত সমস্যা ৪২ শতাংশ এবং অন্তর্মুখী আচরণত সমস্যা ৬২ শতাংশ কমে গেছে। জানান, গবেষক রাইন।
গবেষণাটি প্রকাশিত হয় শিশুতোষ মনোবিজ্ঞান ও মনোরোগ বিষয়ক একটি জার্নালে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৫
এএ