ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনা সংক্রমণ না থামলেও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক

রেজাউল করিম রাজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
করোনা সংক্রমণ না থামলেও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক বাসের ভেতরে কন্ডাকটরের মুখে নেই মাস্ক। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বেশ কিছু দেশে করোনা ভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। তারা সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন করে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

অন্যদিকে আগের চেয়ে সংক্রমণের সংখ্যা নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখনও বিপদসীমার অনেক ওপরে।

আসন্ন শীতকালে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে সাধারণ মানুষ এতকিছু ভাবছেন না। জীবিকার স্বার্থে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এখন স্বাভাবিকভাবেই চলছে।  

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর অধিকাংশ স্থানে সবকিছুই স্বাভাবিক গতিতে চলতে দেখা গেছে।  

রাজধানীর ফার্মগেট, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান এবং মতিঝিল এলাকায় সকালে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম থাকলেও, বেলা বাড়ার সঙ্গেই যানজট বাড়তে দেখা যায়।  

রাজধানীতে চলাচলকারী গণপরিবহনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। গাদাগাদি করে আসন সংখ্যার বেশি যাত্রী নিয়ে বাসগুলোকে চলতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ বাসের চালক, কন্ডাকটর ও হেলপারকে মাস্কবিহীন অবস্থায় দেখা গেছে। যাত্রীদের মধ্যেও মাস্ক পরায় অনীহা লক্ষ্য করা গেছে।  

মিরপুর থেকে মতিঝিল অভিমুখে চলা বিহঙ্গ পরিবহনের হেলপারকে ‘মাস্ক নেই কেন’ বলতেই তিনি পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরে ফেলেন।
 

মাস্ক ছাড়া বাসে যাত্রী ওঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, যাত্রীরা যদি মাস্ক না পরে তাহলে আমরা তো জোর করে পরাতে পারব না। আমরা না নিলে তারা অন্য বাসে ঠিকই উঠবে। আমাদের ক্ষতি হবে।

রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তাঘাটে মানুষজনের ভিড় স্বাভাবিক দিনের মতোই লক্ষ্য করা গেছে। তাদের অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই নেই। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল দেখে বোঝার উপায় নেই যে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকরেও অর্থনীতি এবং জীবিকার স্বার্থে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে করোনা থেকে বাঁচতে হলে মাস্ক পরা, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করার কোনো বিকল্প নেই।  

পল্টন এলাকায় কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিন মাস্ক পরেই বের হই। আজকে ভুলে গেছি।

একই স্থানে আরও কয়েকজনকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে, তারা কোনো উত্তর না দিয়েই দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং দেশের অন্যতম ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, “জীবিকার খাতিরে আমাদেরকে বাইরে যেতে হবে, কাজও করতে হবে। তবে এই করোনাকালে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। হাত চোখে মুখে নাকে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এসব নিয়ম না মানলে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে না। ” 

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
আরকেআর/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।