ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভারী ট্যাংক চায় ইউক্রেন; জার্মানিকে চাপ, রয়েছে শর্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
ভারী ট্যাংক চায় ইউক্রেন; জার্মানিকে চাপ, রয়েছে শর্ত

রাশিয়াকে রুখে দিতে যুদ্ধ চলমান রেখেছে ইউক্রেন। এ অবস্থায় মিত্রদের কাছ থেকে ভারী অস্ত্র চেয়ে আসছে দেশটি।

মূলত তাদের দরকার ভারী ট্যাংক। ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইউক্রেনে ট্যাংক পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। পোল্যান্ড ও ফিনল্যান্ডও সম্মত, কিন্তু তাতে দরকার জার্মানির অনুমতি। কিন্তু দেশটি এখনই মিত্র দেশে এ অস্ত্র পাঠাতে চায় না। কারণ, অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র।

খোলাখুলি বলতে গেলে, ভারী ট্যাংক বলতে ইউক্রেন যেটি চাচ্ছে সেটি লিওপার্ড-২। সরাসরি ট্যাংকটির কথা বলেনি ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। তবে, শক্তিশালী রুশ সেনাদের রুখে দিতে হলে তাদের সেটি দরকার। কিন্তু জার্মানির অনুমতি ছাড়া যেহেতু সম্ভব নয়, ইউক্রেনকে তাই অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

এদিকে, জার্মানি যে অস্ত্র দেবে না তা নয়। তাদের শর্ত আছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভে ট্যাংক পাঠায়, তাহলে ইউক্রেনের নিজেদের ট্যাংক পাঠাবে জার্মানি।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ডসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে রয়েছে লিওপার্ড-২ ট্যাংক। ৬০ হাজার কেজি (৬০ টন) ওজনের ট্যাংকটিতে ১২০ এমএম স্মুথবোর গান আছে। যেটি পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে পারে। কিন্তু জার্মানির অনুমতি ছাড়া এ ট্যাংক অন্য দেশের যুদ্ধের ময়দানে নামাতে ‘না’ রয়েছে।

জার্মানির শর্তানুসারে যুক্তরাষ্ট্র যদি ট্যাংক পাঠায় তবেই ন্যাটোভুক্তে দেশগুলো থেকে ইউক্রেনে ঢুকবে ভারী ট্যাংক। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপের অন্য দেশগুলো তাই জার্মানিকে চাপ দিচ্ছে ট্যাংক দিতে।

জার্মানের শর্তের ব্যাপারটি আসে মূলত দেশটির চ্যান্সেলর ওলফ সুলজের বাক্য থেকে। জার্মান সরকারের একটি সূত্র পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছে, সুলজ সম্প্রতি গোপনে ও প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনে ট্যাংক পাঠানোর কথা উল্লেখ করেছেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার থেকে আসছে অন্য কথা। জো বাইডেনের মুখপাত্র কেরিন জিন-পিয়া বলেছেন, তাদের প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিকে কী ধরনের সামরিক সহায়তা পাঠানো দরকার, সেটি নিয়ে মিত্র দেশগুলোর সিদ্ধান্ত নিতে স্বাধীনতা দেওয়া উচিৎ।

এর মধ্যেই গতকাল বুধবার (১৮ জানুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মেরামতে যুক্তরাষ্ট্র ১২৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন।

দেশটির সামরিক কর্তারা ইউক্রেনে কানাডায় তৈরি স্ট্রাইকার সাঁজোয়া যান পাঠানোর ঘোষণার কথা বলেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ট্যাংক পাঠাতে রাজি নন তারা। অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা কয়েকদিন পর আসতে পারে বলেও জানান তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাংক বলতে কর্মকর্তারা বুঝিয়েছেন এম-১ আব্রাহাম ট্যাংক। ইউক্রেনও এ ট্যাংক চায়। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান নীতি নির্ধারক কলিন কাল বলেছেন, আমাদের মন্ত্রণালয় এটি সরবরাহে প্রস্তুত নয়। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, আব্রাহম ট্যাংক অনেক জটিল ও দামি অস্ত্র, রয়েছে বিমানের ইঞ্জিন। এর ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়ার সহজ নয়। ফলে আমরা এখনই ইউক্রেনকে এ ট্যাংক দেওয়ার অবস্থানে যাইনি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার এক ভার্চ্যুয়াল ভাষণে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি অস্ত্র দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। তার দাবি, রাশিয়া তাদের পরবর্তী ক্ষেপণাস্ত্র ও স্থল হামলা চালানোর আগেই যেন ইউক্রেনকে ট্যাংক দেওয়া হয়। আগামীকাল শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে বৈঠকে মিলিত হবেন ৪০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সেখানে ইউক্রেনকে ট্যাংক দেওয়া নিয়ে কথা হবে।

সূত্র: আল জাজিরা

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।