ফিলিস্তিনের গাজায় ধারাবাহিক আগ্রাসনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। খবরে বলা হয়েছে, সোমবার হোয়াইট হাউসে চতুর্থবারের মতো বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের প্রায় দুই বছরের ধ্বংসাত্মক ‘গাজা যুদ্ধের’ পরবর্তী শাসনব্যবস্থার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। একইসঙ্গে ওয়াশিংটন-তেলআবিবের ‘অটুট সম্পর্ক’ এবার নতুন এক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে পারে।
এর আগে নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে ‘মহত্ব’ ও ‘বিশেষ কিছু’ আনার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ‘গাজা যুদ্ধের এখনই অবসান হওয়া উচিত। ’ গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি বারবার এই যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
এদিকে নেতানিয়াহু মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে বলেছেন, গাজা-পরবর্তী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় চলছে এবং ‘এই পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে। ’
গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে আরব ও মুসলিম নেতাদের কাছে যে ২১ দফা ‘ডে আফটার’ (যুদ্ধ-পরবর্তী) পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেটিই বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রে। ইসরায়েলি ও পশ্চিমা সূত্রমতে, পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, গাজায় এখনও জীবিত বলে ধারণা করা ২০ জনসহ মোট ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দিকে দুই দিনের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে হামাসকে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, হামাস যোদ্ধারা চাইলে গাজা ছেড়ে যেতে পারবেন অথবা সশস্ত্র প্রতিরোধ ত্যাগ করলে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমার সুযোগ থাকবে। একইসঙ্গে দুর্ভিক্ষকবলিত গাজায় ব্যাপক মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি, ইসরায়েলি কারাগার থেকে কিছু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি এবং ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনাও এতে অন্তর্ভুক্ত।
তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিশর ও কাতার থেকে তারা কোনো নতুন প্রস্তাব পায়নি। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পরিকল্পনা দুই দেশকেই জানানো হয়েছে বলে খবর রয়েছে। হামাস বলছে, যুদ্ধ বন্ধের জন্য নতুন কোনো প্রস্তাব পেলে তারা তা বিবেচনা করবে।
এদিকে হামাসের সামরিক শাখা সতর্ক করে বলেছে, গাজা সিটিতে দুই ইসরায়েলি বন্দিকে ধরে রাখা তাদের টিমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সেখানে ইসরায়েলি স্থল অভিযান ও বিমান হামলা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। প্রতিদিন অসংখ্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছেন এবং গোটা এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে।
এমজে