ঢাকা, রবিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অস্ট্রেলিয়াতেও জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
অস্ট্রেলিয়াতেও জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের গণ্ডি পেরিয়ে এবার অস্ট্রেলিয়াতে পৌঁছেছে মশাবাহিত জিকা ভাইরাস। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ফেরত পর্যটকদের মাধ্যমে এ রোগ দেশটিতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ভাইরাসবিদরা।



তবে বিষয়টি এখনও বিপদের লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ প্রজাতির ডেঙ্গুজ্বর ছড়ানো এডিস এজিপ্টি (Aedes aegypti) মশকির মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। আর এ ধরনের মশকির দেখা মেলে অস্ট্রেলিয়ার উত্তর কুইন্সল্যান্ডের দিকে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র সম্পর্ক ও বাণিজ্য বিষয়ক অধিদফতর জনসাধারণকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ২২টি দেশে ভ্রমণ করতে মানা করা হয়েছে। দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার দেশগুলোসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ সামোয়াকে এই ২২ দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতার পরপরই অস্ট্রেলিয়ার সরকার এ পরামর্শ দিল। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, দক্ষিণ, মধ্য ও উত্তর আমেরাকায় জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। তবে কানাডা ও চিলি বিপদের আওতায় নেই।

১৯৪৭ সালে উগান্ডায় লেক ভিক্টোরিয়ার কাছে জিকা বনে প্রথম একটি বানরের দেহে জিকা ভাইরাসের সন্ধান মেলে। পরে ওই বনের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। সাধারণত আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোয় এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তবে এবার তা আমেরিকা মহাদেশে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রাজিলে তা মহামারীর আকার ধারণ করেছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ব্রাজিলে গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় চার হাজার নবজাতক মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত হয়ে বা অস্বাভাবিক ছোট আকারের মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত ৪৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ শিশুর দেহে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, জিকা ভাইরাসের আক্রমণে নবজাতকের মস্তিষ্কের আকার অপেক্ষাকৃত ছোট হয়। তবে এখন পর্যন্ত তা প্রমাণিত নয়।

সিডনিতে ওয়েস্টমিড হাসপাতালের ভাইরাসবিদ অধ্যাপক ডমিনিক ডয়ের বলেছেন, এডিস ছাড়া অন্য কোনো প্রজাতি জিকা ভাইরাস ছড়ানোয় সহায়ক হতে পারে কি না, তা জানা যায়নি। কয়েকজন পর্যটকের দেহে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হলেও তা ছড়িয়ে পড়ার কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি।

এদিকে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এখনও আমেরিকা মহাদেশ ও এর বাইরের ২০টিরও বেশি দেশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ বলবৎ রেখেছে। তালিকায় থাকা প্রতিটি দেশেই জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

দেশগুলোর মধ্যে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া, ইকুয়েডর, গায়ানা, ব্রাজিল, কলোম্বিয়া, এল সালভেদর, গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস, মেক্সিকো, পানামা, প্যারাগুয়ে, সুরিনাম ও ভেনেজুয়েলা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ক্যারিবীয় অঞ্চল, ওশেনিয়া ও আফ্রিকারও কয়েকটি দেশ রয়েছে এ তালিকায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জিকা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় না। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হলে যে ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়, এক্ষেত্রেও একই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। সেই সঙ্গে ত্বকে দাগ দেখা দেয়।

এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এর থেকে বাঁচার উপায় হলো এডিস মশার বংশবিস্তার বন্ধ করা ও মশার কামড় এড়িয়ে চলা। সাধারণত জমাট পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে এ প্রজাতির মশা। কাজেই কোথাও যেন পানি বেশিক্ষণ জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
আরএইচ

** এল সালভেদরে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোনো সন্তান নয়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।