যুক্তরাজ্যের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবল নারীবিদ্বেষী এবং বর্ণবাদী আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্কুলগুলোর শিক্ষকরা। তারা এ বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের ওপর মার্কিন প্রসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিকবক্সার অ্যান্ড্রু টেটের মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের প্রভাব পড়ছে।
ন্যাশনাল অ্যাসোাসয়েশন অব স্কুলমাস্টারস ইউনিয়ন অব উইমেন টিচারস (এনএএসইউডাব্লিউটি)-এর একটি নতুন জরিপে এই প্রবণতার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে দায়ী করা হয়েছে।
এনএএসইউডাব্লিউটি-এর জরিপে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু বিরক্তিকর আচরণ দেখা দিচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে যৌন মন্তব্য, নারী কর্মীদের অসম্মান এবং প্রকাশ্য বর্ণবাদ।
একজন শিক্ষক জানিয়েছেন, অনেক শিক্ষার্থী টেট দ্বারা প্রভাবিত, তারা প্রতিটি কথায় বর্ণবাদী, সমকামী, ট্রান্সফোবিক এবং যৌনতাবাদী মন্তব্য করে এবং এর পরিণতি কী হবে ভেবে দেখে না।
ছেলে শিক্ষার্থীরা ভিডিওতে দেখা টেটের আচরণ অনুকরণ করে এবং নারী কর্মীদের দেখলে অশ্লীল মন্তব্য করে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক। তাদের এই আচরণগুলো নারী শিক্ষকদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা হিংসাত্মক, অনলাইন ভিডিও, ভুয়া খবরে আসক্ত। তারা শিক্ষকদের নির্দেশনা মানতে নারাজ।
শিক্ষকরা আরও জানান, অভিভাবকদের মাঝেও এখন অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক অভিভাবকের সাথে সন্তানের আচরণ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তারা আক্রমনাত্মক হয়ে পড়েন।
সাবেক মার্কিন কিকবক্সার অ্যান্ড্রু টেট সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে একজন নারীবিদ্বেষী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন,মহিলারা ঘরে থাকে, তারা ড্রাইভ করতে পারে না।
তিনি দাবি করেন, পুরুষরা ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের সাথে ডেটিং পছন্দ করে। কারণ তারা কম পুরুষের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়।
শিক্ষকরা অ্যান্ড্রু টেটের প্রভাবকে বিশেষভাবে ক্ষতিকারক বলে উল্লেখ করেছেন। কিছু ছাত্র, বিশেষ করে ছোট ছেলেরা, তার নারী-বিদ্বেষমূলক কন্টেন্ট অনুকরণ করছে।
একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানিয়েছেন, ১০ বছর বয়সী ছেলেরা তার সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা অ্যান্ড্রু টেটকে অনুসরণ করে এবং মনে করে সে যেভাবে মহিলাদের সাথে আচরণ করে তা অসাধারণ।
শিক্ষকরা বলছেন, শুধু মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত করলেই সমস্যার সমাধান হবে না।
শিক্ষাবিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রভাবশালীদের আচরণ শিশুদের ওপর বিপজ্জনক প্রভাব ফেলছে। আসন্ন পাঠ্যক্রম সংস্কার এবং অনলাইন সুরক্ষা আইনের প্রয়োগে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট
বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৫
এসএস/এমএম