ঢাকা, রবিবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ সফর ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘ওয়ানএমডিবি’ থেকে খোয়া গেছে ৩১ হাজার কোটি টাকা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
‘ওয়ানএমডিবি’ থেকে খোয়া গেছে ৩১ হাজার কোটি টাকা! মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক

ঢাকা: মালয়েশিয়ায় ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ’ বা ওয়ানএমডিবি থেকে চার বিলিয়ন ডলার খোয়া গেছে বলে দাবি করেছেন সুইস অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল লবার। ৭৯.০৮ টাকায় এক ডলারের হিসাবে বাংলাদেশি টাকায় অংকটা দাঁড়ায় ৩১ হাজার ৬৩১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।



২০১৫ সালেই সুইস কর্তৃপক্ষ ওয়ানএমডিবি ইস্যুতে একটি তদন্ত শুরু করে উল্লেখ করে শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) মাইকেল লবারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাপলার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির কিছু অর্থ মালয়েশিয়ার সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও নেতার সুইস অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে।

‘ওয়ানএমডিবি’ মালয়েশিয়ার সরকারের একটি কৌশলগত উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। বৈশ্বিক সম্পর্কোন্নয়ন ও সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে দেশের দীর্ঘ মেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ২০০৮ সালে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল তেরেঙ্গানু ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি (টিআইএ)। পরের বছর, ২০০৯ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ’।

আলোচিত-সমালোচিত ‘ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি)’ বিতর্কের সৃষ্টি হয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলা হয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওয়ানএমডিবি ফান্ড থেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন রিংগিত (৫ হাজার ১৮৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা) জমা করা হয়েছে।

তবে শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। গত ২৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার অ্যাটির্ন জেনারেল মোহাম্মদ অ্যাপান্ডি আলিও এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নাজিব এক্ষেত্রে বেকসুর।

ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারিকে ঘিরে তিনটি তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্তে কোনো ঘুষ বা অন্য কোনো ধরনের অর্থ কেলেঙ্কারির তথ্য পাইনি আমরা। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যে অর্থ পাওয়া গিয়েছিল, তা সৌদি রাজপরিবারের দেওয়া অনুদান।

তিনি জানান, ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে কয়েক দফায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে মোট ৬৮১ মিলিয়ন ডলারের (৫ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা) অনুদান আসে। কিন্তু তা কোনো কাজে না আসায় একই বছর আগস্ট মাসে ৬২০ মিলিয়ন ডলার ফেরতও দেন নাজিব।

তবে বাকি ৮১ মিলিয়ন ডলারের (৬৩৪ কোটি টাকা) কি হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অ্যাপান্ডি আলি।

অনুদানের ব্যাপারে এক সৌদি সূত্রও পরে নিশ্চিত করে, নির্বাচনে জিততেই নাজিবকে অনুদানের অর্থগুলো দিয়েছিল সৌদি রাজপরিবার। প্রয়াত বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুলআজিজের ব্যক্তিগত অর্থ ও রাজ্য ফান্ড থেকেই এ অর্থ দেওয়া হয়েছিল।

তবে মালয়েশিয়া ও সৌদি কর্তৃপক্ষ যতোই ‘ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি’র অবসান দেখুক না কেন, সুইজারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ আপাতত দেখছে না। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তারা মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তাও চেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
আরএইচ

** বিতর্কেই কি রাজনীতির ইতি মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর?
** ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি থেকে রেহাই পেলেন নজিব
** নির্বাচনে জিততেই নাজিবকে অর্থ দিয়েছিল সৌদি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।