ঢাকা: বুকার পুরস্কারজয়ী লেখক অরুন্ধতী রায় উগ্র জাতীয়তাবাদী বলে ভারতের দুর্নীতি বিরোধী চলমান আন্দোলনের নেতা আন্না হাজারেকে আক্রমণ করেছেন। সোমবার প্রকাশিত তার একটি কলামে তিনি আন্নাকে সাধু হিসেবেও অভিহিত করেছেন।
‘আমি অন্তত আন্না হবো না’ শীর্ষক এক কলামে এই ঔপন্যাসিক আন্না হাজারের আন্দোলনের ধরন ও এর সারবস্তুর সমালোচনা করেছেন।
অরুন্ধতী রায় তার লেখায় বলেন, অনশন ও আন্নার অন্য সব আন্দোলনের কৌশল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক মহাত্মা গান্ধীর কাছ থেকে রপ্ত করা। তিনি বলেন, ‘তার (আন্না) কৌশল গান্ধীবাদী, তবে তার দাবিগুলো অবশ্যই নয়। ’
আন্না হাজারের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু নতুন দুর্নীতি বিরোধী বিল। ৭৪ বছর বয়সী মানবাধিকার কর্মী আন্না বলেন, দুর্নীতি বিরোধী নতুন খসড়া আইন অত্যন্ত দুর্বল, তা দিয়ে দুর্নীতি ঠেকানো যাবে না। এ ব্যাপারে তার দাবি, রাজনীতিক, আমলা ও বিচারবিভাগের দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ করতে ভিন্ন একটি বিল পাস করতে হবে।
অরুন্ধতী স্বিকার করে বলেন, ‘সরকারের খসড়া বিলে অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে। এটাকে গুরুতরভাবে নেওয়া অসম্ভব। হাজারের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ও কেন্দ্রীভূত ন্যায়পালের দর্শনে মহাত্মা গান্ধী অত্যন্ত হতাশ হতেন। ’
কলামে তিনি বলেন, ‘এটা হবে স্বাধীন প্রশাসন, যার অর্থ হচ্ছে আরেকটি স্ফীতকায়, দায়িত্বহীন ও দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন তৈরি করা--এটা ইতিমধ্যেই আমাদের আছে। ’
গত ছয়দিন ধরে নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে আন্না হাজারে অনশন পালন করছেন। এতে তার সঙ্গে ভারতের হাজার সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছেন। অমিতাভ বচ্চন, লতা মুঙ্গেশকর, শাবানা আজমিসহ দেশটির বিশিষ্ট নাগরিকরা আন্নাকে সমর্থন দিয়েছেন।
ভারত সরকারের সমালোচক হাজারের আন্দোলনে তার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘তারা আমাদের বলছে, আমরা যদি এ অনশনে সমর্থন না করি, তাহলে আমরা সত্যিকার ভারতীয় নই। ’
অরুন্ধতী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এই নতুন সাধু আসলে কে? ভারতের কণ্ঠস্বর?’ হাজারের নিজ প্রদেশ মহারাষ্ট্রে কৃষকদের আত্মহত্যার মতো ঘটনায় নিশ্চুপ থাকারও সমালোচনা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১১