শহরের বিআরডি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নামে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটিতে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাত থেকে শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত এই শিশুদের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। ৩০ শিশুর মৃত্যুর হয় শুক্রবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সরকারি এই হাসপাতালের কাছে তাদের অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বাকি পড়েছিল ৬৬ লাখ রুপি। বারবার চিঠি দিয়েও বিল না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে অক্সিজেন বন্ধ করে দেওয়া হলে ওই রাতেই ২০ শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামলালেও শুক্রবার সন্ধ্যায় আবারও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হলে মারা যায় আরও ১২ শিশু। রাতে মারা যায় আরও এক শিশু।
শনিবার সকালে খবর মেলে, ওই শিশু মিলিয়ে মোট আরও ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে অক্সিজেন সংকটের পাশাপাশি চিকিৎসায় ‘সংক্রমণ’কেও দায়ী করা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, মারা যাওয়া রোগীদের, বিশেষ করে শিশুদের বেশিরভাগই মশাবাহিত ভাইরাস রোগ এনকেফেলাইটিসে (মস্তিষ্কে প্রদাহ ঘটায়, সাধারণ ফ্লুর মতো উপসর্গ) আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিল।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অক্সিজেন সংকটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এনকেফেলাইটিস ও সংক্রমণের ফলেই এই রোগীদের মৃত্যু হয়েছে। যদিও অক্সিজেন সরবরাহকারী পুষ্প সেলস প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মনিশ ভান্ডারী ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
ঘটনাস্থল গোরাখপুর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সংসদীয় (লোকসভা) আসন। দু’দিন আগেই হাসপাতালটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার রাতে ৩০ শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই আদিত্যনাথ তার সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ দুই মন্ত্রীকে হাসপাতাল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলেছেন। একইসঙ্গে চিকিৎসা সেবা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে গেছে বিরোধী কংগ্রেসসহ অনেক দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিদল।
চলতি বছর এনকেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কেবল গোরাখপুরেই প্রায় দেড়শ’ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই শিশু। বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশের অনেক অঞ্চলেই আধুনিক স্বাস্থ্য-সেবা এখনও পৌঁছায়নি বলে মনে করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এইচএ/