ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

খাশোগি হত্যায় সৌদি গোয়েন্দা কর্মকর্তা মুতরেব জড়িত!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৮
খাশোগি হত্যায় সৌদি গোয়েন্দা কর্মকর্তা মুতরেব জড়িত! নিরাপত্তা ক্যামেরার ছবিতে দেখা যাচ্ছে আব্দুল আজিজ মুতরেবকে, ইনসেটে জামাল খাশোগি, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সৌদির প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যায় দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও সাবেক কূটনীতিক মাহের আব্দুল আজিজ মুতরেব গুরুত্বপূর্ণ বা নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে তুর্কি তদন্তের একটি সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র বলছে, খাশোগি হত্যার ষড়যন্ত্রে মুতরেব পুরোপুরিভাবে অবগত ছিলেন। মুতরেব ছিলেন লন্ডনে সৌদি দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি।

তিনি সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের কর্নেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

সৌদি সূত্র বলছে, মুতরেব দেশটির ক্রাউন প্রিন্সের পারসোনাল সিকিউরিটি ফোর্সে থেকে রয়েল গার্ড হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করায় তাকে অভিজাত সুরক্ষা ব্রিগেডের পদে অধিষ্ঠিত করা হয়েছিল। এছাড়া এ বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মোহাম্মদ বিন সালমানের পাশে তাকে একটি ছবিতেও দেখা যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ক্রাউন প্রিন্সের অভ্যন্তরীণ সার্কেলে জড়িত সদস্যদের কোনো অপারেশন মুতরেবকে সরাসরি অবগত করা ছাড়া হয় না।

বৃহস্পতিবার তুর্কি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলের নিরাপত্তা ক্যামেররা ছবিতে মুতরেবকে আশপাশে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। সেসময় তার সঙ্গে অন্তত ১৫ জন সৌদির পুরুষ ছিলেন। আর তারাই খাশোগি ‘হত্যাকাণ্ডে’ জড়িত বলে ধারণা করছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে তুর্কি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, গত ২ অক্টোবর খাশোগি যেদিন নিখোঁজ হন সেদিন ইস্তাম্বুলে চারটি ছবিতে খুব দৃঢ়ভাবে দেখা গেছে মুতরেবকে। নিরাপত্তা ক্যামেরার ছবিতে দেখা যাচ্ছে আব্দুল আজিজ মুতরেবকে, ছবি: সংগৃহীততুর্কি তদন্তকারীরা খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ক্লু বের করতে ক্রমবর্ধমান তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, সাংবাদিক খাশোগি হত্যায় সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের যোগসূত্র রয়েছে।

এর আগে খাশোগিকে হত্যায় মাত্র সাত মিনিট সময় নেওয়া হয় বলে একটি অডিও রেকর্ডিংয়ের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল। অডিও রেকর্ডটি তারা তুরস্কের একটি সূত্র থেকে পেয়েছে বলেও নিশ্চিত করে।

সংবাদমাধ্যম বলে, খাশোগিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের কনস্যুল জেনারেলের অফিস থেকে পাশেই একটি পড়ার টেবিলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে কোনো রকম জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই হত্যা করা হয়। এসময় ঘটনার এক সাক্ষী খাশোগির কান্নাও শুনতে পান বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে যাওয়ার পর থেকে খাশোগি ‘নিখোঁজ’ আছেন।  এরপর তাকে আর দেখা যায়নি। তুর্কি রাজধানী আঙ্কারার দাবি, সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর থেকেই নেই হয়ে গেছেন খাশোগি। তাকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে।

তবে রিয়াদ দাবি করছে, কনস্যুলেট থেকে কাজ সেরেই বের হয়ে গেছেন খাশোগি।

ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার জন্য ওইদিন সেখানে যান সাংবাদিক খাশোগি। কিন্তু তিনি সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসেননি। সৌদি রাজতন্ত্রের শক্ত বিরোধিতাকারী খাশোগি ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।