ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সচলের পরিকল্পনা ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সচলের পরিকল্পনা ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯। এমন সময় আগামী মাসগুলোতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম আবার শুরু করতে অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আবারও সচল করার জন্য তিন স্তর বিশিষ্ট একটি রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন।

এ কার্যক্রমে কেন্দ্রীয় সরকার স্টেট গভর্নরদের সাহায্য করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৩০১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ৩২ হাজার ১৮৬ জন।

এরই মধ্যে চলতি মাসে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রম আবারও শুরুর প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধের পরবর্তী পদক্ষেপ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম আবারও শুরু করা। আমেরিকানরাও চান চামেরিকা খুলুক। দেশজুড়ে শাটডাউন কোনো টেকসই দীর্ঘকালীন সমাধান নয়। ’

‘লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে জনস্বাস্থ্য গুরুতর ঝুঁকিতে পড়তে পারে। মাদকের ব্যবহার, মদ্যপান, হৃদরোগ এবং অন্য শারীরিক ও মানসিক সমস্যা প্রবল বাড়তে পারে। ’

‘শর্ত মেনে সুস্থ নাগরিকরা কাজে ফিরতে পারবেন। তবে সামাজিক দূরত্বায়নের নির্দেশগুলো মানতে হবে এবং অসুস্থ হলে বাড়িতে অবস্থান করতে হবে। ’

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু হবে একই সময়ে একটি করে সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে; কিন্তু গভর্নররা যা করতে চান, সে লক্ষ্যে ‘খুব খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার’ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এ বক্তব্যের পরই হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার এবং ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি মন্তব্য করেন, নতুন নির্দেশনাগুলো ‘অস্পষ্ট এবং অসংলগ্ন’।

তিনি বলেন, ‘এ নথিগুলো বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মানতে এবং দেশজুড়ে দ্রুত পরীক্ষার সরঞ্জাম তৈরি ও বিতরণ করতে প্রেসিডেন্টের ব্যর্থতা ঢাকতে কিছুই করতে পারবে না। ’

ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনা বিশিষ্ট ১৮ পৃষ্ঠার ওই নথিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আবারও সচলের তিন স্তরের পরিকল্পনার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। প্রতিটি স্তরের মেয়াদ হবে কমপক্ষে ১৪ দিন।

প্রথম স্তরে বর্তমান লকডাউন অনুযায়ী অতি জরুরি নয় এমন ভ্রমণ এবং জনসমাবেশ এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে বলে হয়েছে, ‘কড়া শারীরিক দূরত্বের নিয়ম মেনে’ রেস্তোরাঁ, প্রার্থনালয় এবং খেলার স্থানগুলোর কার্যক্রম চলতে পারে।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ার প্রমাণ না পেলে দ্বিতীয় স্তরে যাওয়া যাবে। এ স্তরে অতি জরুরি নয় এমন ভ্রমণ সচল হবে। স্কুল খুলবে এবং শারীরিক দূরত্বের নিয়ম মেনে পানশালাগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে।

তৃতীয় স্তর অনুযায়ী, উপসর্গ এবং নতুন রোগী কমতে থাকলে শারীরিক দূরত্ব মেনে জনসংযোগ চলতে পারে। হাসপাতাল ও সেবালয়গুলোর সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে পানশালায়ও জনসমাগম আগের চেয়ে বাড়তে পারে। কর্মক্ষেত্রেও কর্মীসংখ্যার বিধিনিষেধ থাকবে না।

কিছু অঞ্চলে এক মাসের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু হতে পারে। যেসব অঞ্চলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়তে থাকবে, সেসব অঞ্চলে আরও দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।

হোয়াইট হাউস করোনা ভাইরাস টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক ডা. ডেবোরাহ বির্ক্স বলেন, তিন স্তর অতিক্রম করলে কর্মক্ষেত্রেও কর্মী আরও বাড়তে পারে।

তৃতীয় স্তরই হবে ‘নতুন স্বাভাবিক’। তবে এ স্তরেও ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জনাকীর্ণ স্থানে না যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে এত দ্রুত অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু না করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন কয়েকজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং স্টেট গভর্নর।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।