ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘পাকিস্তান আমলে কোন সূচকে বাংলাদেশ ভালো ছিল?’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
‘পাকিস্তান আমলে কোন সূচকে বাংলাদেশ ভালো ছিল?’

ঢাকা: পাকিস্তান আমলে কোন সূচকে বাংলাদেশ ভালো ছিল- প্রশ্ন তুলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এক মাস আগে একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ বললেন, পাকিস্তান আমলেও এর থেকে ভালো ছিলাম। কোন সূচকে তিনি ভালো ছিলেন, এটা আমার প্রশ্ন।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিকদের সংবর্ধনা এবং উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ২০৪১ গঠনে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।  

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক কমান্ড।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ৬ বছর, এরশাদ সাহেব ১০ বছর, বেগম খালেদা জিয়া ১০ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। এই ২৬ বছর রাষ্ট্রের অবস্থা বা সামাজিকতা কী ছিল, আর আজকে কোথায়? এগুলো তুলনা করলে বোঝা যাবে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা এ দেশ চালিয়েছিল, তারা এদেশের প্রকৃত উন্নতি চায়নি।

তিনি আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আমরা আজ এই অবস্থায় আসতে পেরেছি। পাকিস্তানের ২৩ বছর এই ভুখণ্ড কেমন ছিল, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, তারা নিশ্চয়ই ভুলে যাইনি। সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য, শোষণ, অবিচার, অন্যায় ছিল।

মন্ত্রী বলেন, আমরা পাকিস্তানি সৈন্যদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু তাদের যারা দোসর ছিল, রাজাকার, আল বদর, আল শামস, তারা কেউ যায়নি। যে জামায়াতে ইসলাম রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল, তারা এখনো আমাদের সঙ্গে মিশে আছে। এরা থাকার কারণে স্বাধীনতা বিরোধীরা বলতে পরে, পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম।

পাকিস্তান আমলে কোন সূচকে বাংলাদেশ ভালো ছিল- প্রশ্ন করে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, এক মাস আগে একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ বললেন, পাকিস্তান আমলেও এর থেকে ভালো ছিলাম। কোন সূচকে তিনি ভালো ছিলেন, এটা আমার প্রশ্ন।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকবেই, তা না হলে গণতন্ত্র থাকবে না। কিন্তু যারা স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার চেতনাকে বিশ্বাস করে না, স্বাধীনতাকে মানে না, তাদেরকে জাতি কী বলবে? রাষ্ট্রের যে মূলনীতি সেটাকে তো না মানার কিছু নেই। রাষ্ট্র তো সবার।

রাষ্ট্রের মূলনীতি অস্বীকার করার উপায় নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার জন্ম, লক্ষ্য, মূলনীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে থাকতে এই ধরনের কথা শুনতে হয়। আমরা চাই রাষ্ট্রের মূলনীতি সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকুক।

শহীদদের রক্ত যাতে বৃথা না যায়, সে বিষয়ে কলমযোদ্ধাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির যে লক্ষ্য ছিল, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সর্বক্ষেত্রে দেশের মানুষের মুক্তি, সেজন্য আপনাদের লেখনি সচল থাকুক, সক্রিয় থাকুক।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মৃণাল কৃষ্ণ রায়, শামসুদ্দিন আহমেদ পেয়ার, মো. আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
এসসি/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।