ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সুলতান’স ডাইনে টয়লেটের পাশে ধোয়া হয় থালা, কর্মীদের হাত জীবাণুতে ভরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
সুলতান’স ডাইনে টয়লেটের পাশে ধোয়া হয় থালা, কর্মীদের হাত জীবাণুতে ভরা

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানে সুলতান’স ডাইনে নানা অসংগতি পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিং টিম।  বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে অভিযানকালে সেখানে অননুমোদিত ফিরনি, কর্মীদের হাতে রোগ-জীবাণুসহ অপরিষ্কার পরিবেশ পাওয়া গেছে।

এই পরিস্থিতিতে সুলতান’স ডাইনেকে আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অসংগতি ঠিক করার জন্য বলেছে সরকারের সংস্থাটি।

বিরিয়ানিতে অন্য প্রাণীর মাংস পরিবেশনের অভিযোগ ওঠার পর গুলশানে সুলতান’স ডাইনে প্রায় দেড় ঘণ্টা অভিযান চালায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক (উপ-সচিব) মো. কাওছারুল ইসলাম সিকদারের নেতৃত্বে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব অভিরূপ সাহাসহ সংশ্লিষ্টরা অভিযানে অংশ নেন।

কাওছারুল ইসলাম সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যে অভিযোগ পেয়েছি, তার ভিত্তিতে বলেছি সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে মাংস কিনতে। ভালো সোর্স থেকে আসছে, সেটা যেন তারা কেনে। যারা কর্মী, তারা যেন হাইজিন মেইনটেন করে। অ্যাপ্রন ও হ্যান্ড গ্লোভস পরবে, নিয়মিত হেলথ চেকআপ করবে। সব হোটেলের জন্য পালনীয় যে নির্দেশনা, তা ফলো করতে বলেছি। তাদের রান্না লাইভ করতে বলেছি।  

রমজানের আগে তাদের সময় দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হাইজিনিং চেক করার জন্য আমরা আবার যাব। এই সময়ে তাদের সংশোধন হতে হবে।

অভিযানে অংশ নেওয়া একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, অন্য প্রাণীর মাংস বলে যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, আমরা তেমন কিছু পাইনি। তবে কিছু অসংগতি ছিল, যেমন- হাইজিনিং, ফুড সেফটি।

তিনি জানান, তারা (সুলতান’স ডাইন) যে ফিরনি তৈরি করে, সেটার বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স ছিল না। তাদের সতর্ক করা হয়েছে। যেন তারা দ্রুত লাইসেন্স নিয়ে ফিরনি বিক্রি শুরু করে।  

যেখানে ডিস ধোয়া হয় সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ছিল না। তার পাশেই টয়লেট। টয়লেট থাকলে সেখানে রোগ-জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এ বিষয়েও তাদের সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ওই কর্মকর্তা বলেন, তারা যে মসলা ভর্তা করল বা বাটল, সেগুলো রাখার জন্য যে বালতি ব্যবহার করছে, সেগুলো ফুড গ্রেড না। তারা যেন ফুডগ্রেড সামগ্রী যেমন- স্টেইলনেস স্টিল ব্যবহার করে, সে বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা তাদের কিছু কর্মীর তাৎক্ষণিক টেস্ট করি। তাদের হাতের কী অবস্থা দেখলাম! আমরা তিনজনের পরীক্ষা করি। তিনজনেরই দেখলাম হাত রোগমুক্ত ছিল না। অনেক জীবাণু ছিল হাতে। কীভাবে হাত ধুতে হবে এবং ব্যবহার করবে সে বিষয়ে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রান্না ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, আজকে কোনো মোবাইল কোর্ট ছিল না, মনিটরিং ছিল। এ বিষয়গুলো ঠিক করার জন্য ২০ তারিখ (মার্চ) পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে সংশোধন করতে বলা হয়েছে। এরপর আমরা পরীক্ষা করে দেখব। যদি তারা নিজেরা সংশোধন করতে পারে তো ভালো, তা নাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুলতান ডাইন’সের গুলশানের ম্যানেজার আশরাফ আলম বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের লোকজন এসেছিল। অনুমোদিত ভেন্ডর থেকে মালামাল নিতে বলেছে। আর হাইজিন মেইনটেন করতে বলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
এমআইএইচ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।