ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চিরকুটে লেখা, ‘মরে গেলাম, আমাকে পালকি করে নিয়ে যাবে’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
চিরকুটে লেখা, ‘মরে গেলাম, আমাকে পালকি করে নিয়ে যাবে’

কুমিল্লা: জেলার নাঙ্গলকোটে তানিয়া আক্তার তানজিনা (২০) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

এতে লেখা রয়েছে- ‘আমাকে (লাশ) পালকি করে নিয়ে যাবে। মরে গেলাম, আমাকে কেউ ফিরে পাবে না। ’

বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা দক্ষিণ শাকতলী গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তানজিনার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

তানজিনা ওই গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে ও পৌর সদরের নাওগোদা গ্রামের সোহাগ মিয়ার স্ত্রী।  

তানজিনা আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা তার পরিবারের সদস্যদের। তবে তার আত্মহত্যা করার পেছনে কোনো কারণ খুঁজে পায়নি পরিবার।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ২ বছর আগে পৌর সদরের নাওগোদা গ্রামের সোহাগের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তানজিনার। এ দম্পতির ঘরে এক বছরের মেয়ে রয়েছে। স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে চট্টগ্রামে থাকতেন তানজিনা। গত ১০ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ি নাওগোদা আসেন তানজিনা। এরপর ১৩ নভেম্বর স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান তানজিনা। বুধবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে স্বামী সোহাগ ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম চলে যান। এদিন বেলা ১২টার দিকে তানজিনার মরদেহ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।  

মরদেহের পাশে চিরকুটে লেখা রয়েছে- ‘আমি মরে গেলে আমার মরার পেছনে কেউ নেই। আমি নিজ ইচ্ছায় জীবন দিয়েছি। আমাকে মাটি দেবেন চট্টগ্রামে। আমাকে বাড়িতে মাটি দেবেন না। আমি মরার পরে কেউ কান্না করবে না। আমাকে মাটি দেবে চারজন। তারা হলো শহরের মানুষ। আমাকে মাটি দেবে হৃদয়, আকরাম, রাজু ভাই ও রকি ভাই। আর কেউ মাটি দেবে না। আমি বলে গেলাম। আর আমাকে পলকি করে নিয়ে যাবে। আমার কবরে প্রথম মাটি দেবে আমার বাবা। তার টাকা দিয়ে আমার কাফনের কাপড় কিনবে। আমি মরে গেলাম। আমাকে কেউ ফিরে পাবে না। ইতি তানজিনা। ’

তানজিনার মা আছমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, সপ্তাহখানেক আগে মেয়ে ও তার স্বামী সোহাগ চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসে। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো ঝগড়া-ঝামেলা ছিল না। বুধবার ভোরে ভালোমতোই তার স্বামী সোহাগ চট্টগ্রামে চলে যায়। বেলা ১২টার দিকে সে চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। কেন আমার মেয়ে এমন করলে বুঝতে পারছি না।

নাঙ্গলকোট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।