ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে মারধরে হাসপাতালে স্কুলছাত্র, শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৪
সিলেটে মারধরে হাসপাতালে স্কুলছাত্র, শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত 

সিলেট: অংক বুঝিয়ে দিতে না পারায় সিলেটের ব্লুবার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেছেন মিটু বিশ্বাস নামে এক শিক্ষক বলে অভিযোগ উঠেছে।  

গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত ছাত্র তৌসিফ ইকবাল চৌধুরী (১৪)  সিলেট নগরের সুবিদবাজার নূরানী আবাসিক এলাকার ৪২/১১ বাসার মো. ইকবাল চৌধুরীর ছেলে।  

বুধবার (১৫ মে) দুপুরে অংকের ক্লাস চলাকালে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন বলে জানিয়েছেন ওই ছাত্রের মা স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য মোছা. আলেয়া বেগম। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই কলেজে অধ্যক্ষ হুসনে আরা।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কি জন্য ওই ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে, প্রকৃত ঘটনা খতিয়ে দেখার আগেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কেননা, দোষ করলেও ছাত্রকে মারাটা সমর্থন করি না।   

আহত ছাত্রের মা মোছা. আলেয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার অংক ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক মিটু বিশ্বাস। ক্লাস চলাকালে তৌসিফ ইকবালকে অংক বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ডেকে নেন। কিন্তু সে অংক বুঝিয়ে দিতে না পারায় প্লাস্টিকের তিনটি স্কেল জোর করে বেধড়ক পেঠাতে থাকেন। মারধরে স্কেল ভেঙে গেলে মাথায় ও শরীরে কিলঘুষি মারতে থাকেন। ক্লাস শেষে তৌসিফ আহত অবস্থায় বেরিয়ে আসে। তাকে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে, তখন শিক্ষকের মারধরের কথা জানায়। তাকে বলিন, তুমি নিশ্চই কোনো দোষ করেছো। নয়তো শিক্ষক কেন এভাবে মারবেন? তখন সে দাঁড়াতে পারছিল না। এরপর পেছন থেকে দৌড়ে এসে তার সহপাঠীরা জানায়, সে কোনো দোষ করেনি, মিঠু স্যার তাকে অহেতুক মেরেছেন। মারধরে সে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে। এ অবস্থায়ও ক্লাসে ছিল।   

আলেয়া বেগম বলেন, আমি শিক্ষকদের সম্মান করি। গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে কিছু বলতে চাইনি। পরে গভর্নিং বডির বর্তমান ও সাবেক সদস্যরা জেনেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে আলাপ করেছেন। রাতে ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করি। তার মাথা ও ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা করছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ খবর নেননি। পরে বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে অধ্যক্ষসহ আরও ক’জন শিক্ষক এসে দেখে গেছেন।

তিনি বলেন, একজন ছাত্র লেখাপড়ায় পিছিয়ে থাকতেই পারে। তাই বলে এভাবে মারতে হবে। আর ওই শিক্ষক নাকি প্রায়ই ছাত্রদের বলে থাকেন, গভর্নিং বডির সদস্যের ছেলে হলেও কি হবে, আমি মারলে কেউ বিচার করতে পারবে না। তিনি এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রয়োজনে থানায় অভিযোগ করবেন। তার আগে ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে চান।  

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মিঠু বিশ্বাসের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ছাত্রদের কাছ থেকে ঘটনাটি জেনে নিতে বলেন। ছাত্ররা পড়ালেখায় অমনযোগী হলে উৎসাহিত না করে মারার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বাসে আছি, পরে কথা বলব।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৪
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।