ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৮ জুন ২০২৪, ১০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীতে জমে উঠেছে কোরবানির ছুরি-বটি ও পশুখাদ্য বিক্রি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
রাজধানীতে জমে উঠেছে কোরবানির ছুরি-বটি ও পশুখাদ্য বিক্রি

ঈদের দুইদিন আগে থেকেই রাজধানীর মহল্লায় মহল্লায় কোরবানির মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ উপকরণ ও কোরবানির পশুখাদ্য বিক্রির দোকান জমে ওঠেছে। গরু, ছাগল, ভেড়া বা উট যে পশুই হোক না কেন, মাংস কাটাকুটির এসব উপকরণ ও পশুখাদ্য মিলছে হাতের নাগালেই ।

শনিবার (২৫ জুন) সকালে রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর মহল্লায় মহল্লায় কোরবানি পশু জবাই করার মত বড় ছুরি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকা থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায়, মাঝারি এক হাজার থেকে ১২শ টাকা। মাংস কাটা বড় চাপাতি এলাকা ভেদে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। ছোট চাপাতি ৬০০ টাকা। বড় বটি ২০০০ টাকা, মাঝারি ১২০০ শ টাকা, ছোট বটি ৫০০ থকে ৬০০ টাকা।

মাংস কাটার কাঠের খাইট্টাও (গুড়ি) মিলছে রাজধানীর এলাকায় এলাকায়। তেঁতুলের একেকটি বড় খাইট্টার দাম ৬০০ টাকা, তুলনামূলক ছোট্ট খাইট্টার দাম ৪০০ টাকা।

কোরবানির পশুর গলায় দেওয়া রঙিন মালার দাম ধরন ভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। মাংস প্রক্রিয়াকরণ করে রাখার গোলপাতার পাটির দাম ৩০০ টাকা।

এক ‍মুঠো কাঁচা ঘাস বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। ধানের শুকনো একমুঠো বিছালীর দাম ১৫ টাকা। প্রতি কেজি গমের ভুসির দাম ৭০ টাকা, ছোলার ভুসি ৭০থেকে বাজার ভেদে ৮০ টাকা, ধানের ৩০ টাকা। কোথাও কোথাও ছাগলের খাওয়ার জন্য কাঁঠালের পাতাও বিক্রি হতে দেখা গেছে। পরিমাণ ভেদে এ সব কাঁঠালের পাতার দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে অধিকাংশ ব্যবসায়ী এ সব সদাই নিয়ে বসেছে। এ সব ব্যবসায়ীর বড় একটি অংশ ভ্যানে করে রাজধানীর বিভিন্ন রকম পণ্য বিক্রি করা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, যারা ঈদকে সামনে করে খাস, ভুসি বিক্রি করছে।  

মিরপুরের-১০ নম্বরের সেনপাড়া মোড়ের এক সঙ্গে ১০ থেকে ১২ রকমের পশুখাদ্য নিয়ে বসেছে সোহেল আব্দুল্লাহ। তার সাথে দুই জন সহকারী রয়েছে। তিনি জানান, কোরবানির পশুর জন্য এ সব খাদ্য বিক্রি লাভ যাই হোক, কোরবানির খাদ্য বিক্রির সঙ্গে এক ধরনের পবিত্র ব্যাপার আছে। যারা কোরবানি দিচ্ছেন সেই মানুষদের সঙ্গেও দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। ভাল লাগে। এমন ভাল লাগা থেকে গত বছর দোকান দিয়েছিলাম, এবারও দিয়েছি।

পাশে আরেক পশুখাদ্য বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, তিনি সারা বছর অন্য পণ্য বিক্রি করেন। ঢাকার মানুষ বাইরে চলে যাওয়ার কারণে তার ব্যবসা চলবে না। এ জন্য খাইট্টাসহ পশুখাদ্য বিক্রি শুরু করেছি।  

ফার্মগেটের কুনিপাড়ার আমিরুল ইসলাম সৌখিন ব্যবসায়ী। শুক্রবার পশুখাদ্য নিয়ে কুনিপাড়ার মোড়ের পাশের জায়গা পরিষ্কার করে বসেছেন। জানান, গতকাল সন্ধ্যা থেকেই পশুখাদ্য বিক্রি শুরু হয়েছে; তবে কম। আজ বিক্রি বাড়বে। আগামীকাল বেশি বিক্রি হবে এবং রাত পর্যন্ত এই বিক্রি চলবে।  

আমিরুল ইসলাম পোরশুদিন পশুর চামড়া সংগ্রহ করবেন। এবং সাইন্স লাইব্রেরির সড়কে পাইকারি বাজারে বিক্রি করবেন।

কোরবানিকে সামনে করে কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে। এক মাস আগে থেকেই কামাররা ছুরি, বটি ও চাপাতি বানানো শুরু করেছে। এখনো বানিয়ে চলেছেন। শুক্রবার থেকে কামারশালার সামনে এ সব দেশি সরঞ্জাম বিক্রির জন্য প্রদর্শন শুরু করে।

মিরপুর-১০ এ অবস্থিত বিআরটির গলিতে কামার ছুরি,বটি, চাপাতি তৈরি করছে। কাজীপাড়ার গলিতেও ছুরিম চাপাতি পাইকারি পাওয়া যাচ্ছে।

অনিল নামের এক কর্মকার বাংলানিউজকে জানান, আমরা দেশীয় পদ্ধতিতে লোহা থেকে এ সব ছুরি, বটি ও চাপাতি তৈরি করে থাকি। নিজেদের পছন্দ মত এইসব জিনিস তৈরি করা করি। আবার পাইকারি অর্ডার দিলেও পছন্দ মত তৈরি করে থাকি। গত বছরের তুলনায় এবার লোহার দাম অনেক বেড়েছে। এ কারণে ছুরি,বটি, চাপাতির দামও বেড়েছে বলে জানান অনিল কর্মকার।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, এবার সারাদেশে এক কোটি ৭ লাখ পশু কোরবানি হবে। এর প্রায় অর্ধেক পশুই কোরবানি হবে রাজধানী ঢাকাতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা,জুন ১৫, ২০২৪
জেডএ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।