ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

‘কোন শহরের রাস্তা গো, লাগে উরাধুরা’ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
‘কোন শহরের রাস্তা গো, লাগে উরাধুরা’ 

ঠাকুরগাঁও: প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হয়েও বেহাল দশা ঠাকুরগাঁওয়ের পৌরশহরের সড়কগুলোর। অধিকাংশ সড়কের ঢালাই উঠে গিয়ে সড়কগুলো খানাখন্দে পরিণত হয়েছে।

আর একটু পানিতেই সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।  

এতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন গাড়িচালক ও পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। আর প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয়রা। বারবার বলার পরও সংস্কার না হওয়ার গানের সুরে সড়কে লেখনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  

শনিবার (৩০ জুন) ভোররাতে ভাঙা সড়কের দ্রুত সংস্কারে দাবিতে বিভিন্ন সতর্কতা ও গানের সুরে সুরে প্রতিবাদ করা হয়৷ যার নেতৃত্ব দেন  আ.লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক কামরুল হাসান খোকন৷ 

১৯৯৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয় ঠাকুরগাঁও পৌরসভাকে। টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ করে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সুপরিকল্পিত উন্নত ড্রেনেজ, পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাসহ নানামুখী কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন পৌরসভাটির ভিশনে দেওয়া থাকলেও বাস্তবে মিলছে না তার অস্তিত্ব। বেহাল সড়ক, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা,অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত পৌরসভাটি।  

পৌর শহরের ১২টি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হলেও এসব রাস্তার প্রায় ৮০ শতাংশেরই বেহাল দশা। জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা থেকে কালিবাড়ী হয়ে সত্যপীর ব্রিজ, চৌরাস্তার উত্তরে নরেশ চৌহান সড়ক থেকে শুরু করে সেনুয়া পর্যন্ত, জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের গেটের সামনের সড়ক, শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে অবস্থিত জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পেছনের সড়ক, হাজীপাড়া, আশ্রমপাড়া, শাহাপাড়া, ঘোষপাড়া, গোয়ালপাড়া, নিশ্চিন্তপুরসহ আরও বেশ কয়েকটি মহল্লার প্রধান প্রধান সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল।

সড়কগুলোর ঢালাই উঠে যাওয়ার পরে সেগুলোতে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে৷ অল্প বৃষ্টিতে সড়কের পাশে জমে থাকে পানি। এতে করে নানা ধরনের ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চালক-আরোহীদের। যার প্রভাব পড়ছে জরুরি চিকিৎসা, শিক্ষা,ব্যবসাসহ নানা ধরনের জরুরি কাজে।  

পৌরসভা কার্যালয়ের সূত্র মতে, পৌরসভায় মোট ১৩৫ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এরমধ্যে পাকাকরণ হয়েছে ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা ও ৫০ কিলোমিটার রাস্তা এখনো কাঁচা রয়ে গেছে।  

আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান খোকন বলেন, শহরের চারপাশের রাস্তাগুলোর একেবারে বেহাল দশা। রিকশাগুলো অধিকাংশ সময় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে। সামনে ভাঙা, সাবধানে চলুন, ডানে ভাঙা এমন বিভিন্ন সতর্ক বাণী ও  ‘কোনো শহরের রাস্তা গো লাগে উরাধুরা’ এমন কিছু গানের কথার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আশা করছি কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন৷ 

স্থানীয় বাসিন্দা সত্য প্রসাদ ঘোষ নন্দন বলেন, প্রতিনিয়ত নানা কাজে বের হতে হয়। অথচ অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এমনকি হেঁটে রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না৷ অসুস্থ ব্যক্তিরা কোনোভাবেই যাতায়াত করতে পারেন না। আমরা পৌরসভার সব ধরনের কর, ট্যাক্স দেয়। অথচ তারা আমাদের ভোগান্তি চোখে দেখেন না।  

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র আন্জুমান আরা বন্যা বলেন, কয়েকটি সড়কে পিচঢালা উঠে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরে সেগুলো সংস্কারে কাজ করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।