ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আশুলিয়ার মেজবাহুল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

অতিথি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৪
আশুলিয়ার মেজবাহুল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

সাভার (ঢাকা): ঢাকার আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর মেজবাহুল (১৭) হত্যাকাণ্ডের হোতা ইয়াসিনসহ (২২) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। এ নিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, র‍্যাব-৪ এর স্কোয়াড কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সাজ্জাদুর রহমান। এর আগে শনিবার (২৪ আগস্ট) আশুলিয়ার বাইপাইলের নামাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

নিহত মেজবাহুল (১৭) গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার স্থায়ী বাসিন্দা। সে আশুলিয়ার বটতলা এলাকার একটি গামেন্টসে আসামিদের সঙ্গে প্রিন্টিং ও সুতার কাজ করতো।

গ্রেপ্তাররা হলেন-জয়পুরহাট জেলা সদরের ভানাই কুশলিয়া গ্রামের মো. সেলিম হোসেনের ছেলে মো. ইয়াসিন আরাফাত (২২), বরগুনা জেলার বেতাগি থানার ২০ নং খান্তাখাটা লক্ষ্মীপুর গ্রামের সাত্তার আকনের ছেলে তামিম আকন (১৮) ও ফরিদপুর জেলার সালথা থানার বরখারদিয়া গ্রামের বাচ্চু মুন্সির ছেলে আল আমিন ইসলাম ওরফে মুন্না মুন্সি শিহাব। তারা সবাই আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া থেকে আশুলিয়ার বটতলা এলাকার একটি গামেন্টসে প্রিন্টিং ও সুতার কাজ করতো। এছাড়াও গত ১৯ আগস্ট এজাহারের সূত্র ধরে আশুলিয়ার চালাবাজার এলাকায় অভিযান রবিউল (১৮) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, গত ৩১ জুলাই সকালে আশুলিয়া থানার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া এলাকার কাঠ বাগানের ভেতর থেকে একটি অজ্ঞাতনামা গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছায়াতদন্ত করে র‍্যাব-৪।

এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল শনিবার আশুলিয়ার বাইপাইল নামাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই বিকেলে গ্রেপ্তার আসামিরা নিহত ভিকটিম মেজবাহুলকে (১৭) নিজ বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সে বাসায় ফিরে না আসলে মিজবাহুলের ফোনে ফোন করে বাবা। এ সময় গ্রেপ্তাররা মুক্তিপণ হিসেবে নগদ ২৪ হাজার টাকা দাবি করে ফোনটি বন্ধ করে দেয়। মেজবাহুলকে না পেয়ে তার বাবা আসামি রবিউলের বাসায় গিয়ে সন্তানের খোঁজ জানতে চাইলে সে কৌশলে এড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে গত ১৯ আগস্ট মেজবাহুলকে গলা কেটে হত্যার পর মরদেহ বাড়ইপাড়ার কাঠ বাগানের ভেতর ফেলে দেয় বলে জানতে পারে পরিবার।  

পরে ভিকটিমের পরিবার আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ জানায় গত ৩১ জুলাই উল্লেখিত স্থান থেকে অজ্ঞাতনামা গলাকাটা মরদেহ পাওয়া গেলে টাঙ্গাইলের এক ব্যাক্তি ছেলের মরদেহ দাবি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে টাঙ্গাইলের সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

র‍্যাব-৪ এর স্কোয়াড কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা এবং চাকরির সুবাদে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। আসামিরা ওই এলাকায় বসবাসরত ভিকটিম মেজবাহুলকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী আসামিরা গত ৩০ জুলাই বিকেলে মেজবাহুলকে বেড়ানোর কথা বলে নিজ বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তার ফোন থেকে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় তারা মেজবাহুলকে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।  


তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ