নড়াইল: নড়াইলে কয়েকদিন থেমে থেমে হালকা বৃষ্টির পর রোববার (২৫ আগস্ট) রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে জেলা শহরের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে ১১টার দিকে পৌর এলাকার মহিষখোলা, আলাদাতপুর, দূর্গাপুর, ভওয়াখালী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এলাকার অনেক স্থানে ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠান ও রাস্তায় পানি জমেছে। জলাবদ্ধতায় অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঘরের সামনে পানি জমায় অনেকে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। কারও কারও রান্নাঘর-টিউবওয়েলের কিছু অংশ ডুবে গেছে পানির নিচে।
যার ফলে পানি ওঠে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বাসা-বাড়িতেও। অধিকাংশ রাস্তায় গোড়ালি, আবার কোথাও হাঁটুপানি জমেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী।
আলাদাতপুর এলাকার বাবু মোল্যার বাড়ি একেবারে পানিতে তলিয়ে গেছে, বাড়ির ফার্নিচার সব পানিতে ভিজে গেছে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বাড়ির নীচ তলায় হাঁটুপানি জমেছে। টিউবওয়েলের কিছু অংশ পানিতে ডুবেছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছি আমরা। এদিকে রান্নাঘরেও পানি প্রবেশ করায় আজ সকালের রান্নাও বন্ধ।
একই এলাকার আমজাদ শেখ পরিবার নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয়ের জন্য যাচ্ছেন। গৃহবধূ আসমা বেগম বলেন, রাতভর ফার্নিচার সরাতে ব্যস্ত ছিলাম। সকালে কিছু খায়নি এমনকি বাথরুম ও করার উপায় নাই। এখন আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছি।
হাঁটুপানি জমে আছে ভাদুলিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আসিস বিশ্বাসের বাড়িতে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক দিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নামছে। গতকাল রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমাদের ঘরে পানি উঠে গেছে। বাড়ির চারপাশে হাঁটুপানি জমে আছে।
নড়াইল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে ২৮ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয় এ পৌরসভা। ১৯৯৯ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। শহরটির জন্য ৫৫ কিলোমিটার নালা ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র তিন কিলোমিটার।
নড়াইলের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, যুগ যুগ ধরে নাগরিকের এই দুর্ভোগে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে করতে কোনো উদ্যোগই নেননি পৌরকতৃপক্ষ। তারা বড় প্রকল্প তৈরি করেই টাকা হাতিয়ে নিতে ব্যস্ত ছিলেন। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে নড়াইল।
জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভার উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ওহাবুল আলম বলেন, প্রতিবছর পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করা হয়। এ বছরও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পানি সরাতে কাজ করা হয়েছে, যে পরিমাণ ড্রেন দরকার তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পৌরসভার হাতে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৪
এসএম