ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘কম দামে’ সবজি মেলে হাজীপাড়ায়, আসেন হাজারো ক্রেতা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২৪
‘কম দামে’ সবজি মেলে হাজীপাড়ায়, আসেন হাজারো ক্রেতা

ঢাকা: রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের জন্য এখনো অনেক জিনিসপত্র যেমন- আলু ও পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক বেশি। তবে রামপুরা এলাকায় বিশেষ করে রামপুরার পূর্ব হাজীপাড়া নতুন সড়কে একটি সবজির বাজার আছে, আশপাশের বাজারের তুলনায় সেখানে সবজির দাম কিছুটা কম।

এখানে সড়কের দুপাশে বাজার থেকে ক্রেতারা কখনো ১০ থেকে ১৫ টাকা, আবার কখনো কখনো ২০ টাকা পর্যন্ত কম দামে সবজি কিনতে পারেন। এখান থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আনুমানিক প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বাজার করে থাকেন। যারা মূলত স্বল্প আয়ের।

এভাবে রামপুরার পূর্ব হাজীপাড়া ওয়াসা রোডের নতুন সড়কে বাজারটি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপণন কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যেখানে তারা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সবজিসহ ছোট-বড় মাছ কিনতে পারেন কম দামে।

রামপুরার পূর্ব হাজীপাড়া ওয়াসা রোডের নতুন সড়কে বউ বাজার নামে পরিচিত সেই বাজারে গিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

সড়কের দুপাশে নিজস্ব মালিকানায় ভাড়া করা বেশ কয়েকটি সবজির দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। সবজির দোকানের পাশে ছোট একটি পান-সুপারির দোকানদার মো. রায়হান জানান, গত ২৫ বছর ধরে তিনি এখানে দোকানদারি করে আসছেন। এ বাজারটি বউ বাজার নামে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন রকম সবজির পাশাপাশি ছোট-বড় সব রকমের মাছ পাওয়া যায়। এছাড়া অন্যান্য জিনিসপত্র তো আছেই।  

এ বাজারটির বয়স বলতে না পারলেও তিনি বলেন, যুগ যুগ ধরে এ বাজার এখানে বসে। বর্তমানে এ বাজারের চারপাশে বড় বড় ভবন নির্মাণ হয়েছে। তাই বাজারটি ছোট হয়ে আসছে। আগে এখানে সড়ক এত আধুনিক ছিল না। আশপাশে অনেক সেমি-পাকা ও ঝুপড়ি ঘর ছিল। এখন সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। এটিও একটি কারণ বাজারটি ছোট হয়ে যাওয়ার। বাজারটির অধিকাংশ ক্রেতারা হচ্ছেন নিম্ন আয়ের। যেমন- পোশাকশ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ এ রকম ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও আছেন।  

রায়হান বলেন, রামপুরা, মালিবাগসহ আশপাশে যত বাজার আছে, সেখানকার তুলনায় এ নতুন সড়কের বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কম দামে সবজি পাওয়া যায়। কারণ এখানে স্বল্প আয়ের মানুষ সকাল থেকে দুপুর হয়ে সন্ধ্যা এমনকি রাত পর্যন্ত সবজিসহ নানা রকম জিনিসপত্র কিনে থাকেন।

সবজি বিক্রেতা আনিসুল হক বলেন, রামপুরা বাজারে যেমন ধরেন মিষ্টি কুমড়া কেটে কেজি বিক্রি করে ৪০ টাকা। আমাদের এখানে ৩০ টাকার পাশাপাশি ধরন অনুযায়ী ২০ টাকাও আছে। রামপুরা বাজারে ঘণ্টায় যদি দুই হালি কাটা মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয়, তাহলে আমাদের এখানে বিক্রি হবে তার চার গুণ বেশি।

তিনি আরও বলেন, এ বাজারে সকাল, দুপুরের তুলনায় বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতে ক্রেতার সংখ্যা বেশি থাকে। কারণ স্বল্প আয়ের মানুষ সারাদিনের কাজ শেষ করে রাতে বাজার করে থাকেন। এছাড়া এ এলাকার সড়কের অলিগলিতে অসংখ্য পোশাকশ্রমিক ও দিনমজুর বেশি থাকেন। আর এখানে অধিকাংশ নারীই বেশি বাজার করে থাকেন। তাই হয়তো এ বাজারের নাম বউ বাজার বলে পরিচিত।

বউ বাজারে সবজি কেনার সময় পোশাকশ্রমিক আব্দুল মালেকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকার হুজি গার্মেন্টসে কাজ করেন তিনি। এ নতুন সড়ক এলাকায় বসবাস করেন তিনি। প্রায়ই তিনি বউ বাজার থেকে সবজি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনেন।

গর্বের সঙ্গে মালেক বলেন, রামপুরা মেইন রোড সংলগ্ন বাজার ও মালিবাগসহ আশপাশের বাজারগুলোর তুলনায় বউ বাজারে সবজি ১০ থেকে ১৫ টাকা কম দামে পাওয়া যায়। বিশেষ করে রাতে দাম আরও কমে যায়।  

তার হাতে থাকা দুটি মাঝারি সাইজের ফুলকপি দেখিয়ে তিনি বলেন, এ ফুলকপি দুটি আমি ৬০ টাকা দিয়ে নিয়েছি। অন্যান্য বাজারে এর দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৪
এজেডএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।