টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিভিন্নজনের ছবি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও বানিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করে টাকা দাবির ঘটনায় এক স্কুলছাত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) গ্রেপ্তার ওই স্কুল শিক্ষার্থীকে আদালতে পাঠায় থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থী ভূঞাপুর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী।
এদিকে ওই স্কুলছাত্রীকে গ্রেপ্তারের খবরে থানায় হাজির হন কয়েকজন ভুক্তভোগী। এসময় তারা ওই ছাত্রীসহ তার অভিভাবকদেরও শাস্তির দাবি করেন।
পুলিশ জানায়, উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা ও ছাত্রী বিভিন্ন ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও তৈরি করে একাধিক মেসেঞ্জার গ্রুপ বানিয়ে সেখানে পোস্ট করে। পরে পোস্ট করা ভিডিওর সঙ্গে মোবাইল নম্বর দিয়ে লাখ লাখ টাকা চাওয়া হয়। ‘দিলরুবা’ ও ‘রাকিবুল ইসলাম’ নামের আইডি থেকে এলাকার অনেকের আইডি যুক্ত করে মেসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করে। সেই গ্রুপে পর্নো ভিডিও পোস্ট করা হয়। পরে ফেসবুক, গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইডিগুলোর মালিক বা ব্যবহারকারী শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীর ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জব্দ করা ফোনে এসব পোস্ট ও ভিডিও ছড়ানোর সত্যতা পাওয়া যায়।
পর্নো আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তির সামাজিক বা ব্যক্তি মর্যাদা হানি করিলে বা ভয়ভীতির মাধ্যমে অর্থ আদায় বা অন্য কোনো সুবিধা আদায় বা কোনো ব্যক্তির জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে ধারণকৃত কোনো পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে মানসিক নির্যাতন করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২,০০,০০০ (দুই লাখ) টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
গ্রেপ্তার স্কুলছাত্রী বলে, আমার ছবি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও বানানো হয়েছে। সেই ভিডিও দিয়ে আমার পরিবারের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত মির্জাপুরের সীমান্ত ও গোপালপুরের সিফাতকে পুলিশ ডেকে এনেছিল। তারা স্বীকারও করেছে কিন্তু তারপরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কাজের সঙ্গে আমি জড়িত না সেটার প্রমাণ আমার কাছে আছে।
গ্রেপ্তার স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আমার মেয়ের ছবি দিয়ে নগ্ন ভিডিও বানিয়ে টাকা দাবি করা হয়েছিল। যে নম্বরগুলোতে টাকা চাওয়া হয়েছিল তাদের পুলিশ ধরেছিল। তারা স্বীকারও করেছে এ ঘটনা। সে সময় মেয়ের মোবাইল চেক করে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফেরত দিলেও রোববার রাতে মেয়েকে থানায় নিয়ে যায়। পরে সোমবার পর্নোগ্রাফি মামলায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এটার সঙ্গে আমার মেয়ে জড়িত না।
ভূঞাপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, জি-মেইল দিয়ে একাধিক ফেসবুক আইডি খোলা হয়েছে ওই ছাত্রীর মোবাইল দিয়ে। লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই কিছু বলতে চান না। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়। এতে গুগল, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে তদন্তে আইডির ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই ওই ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
আরএ