ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলে পোল্ট্রি খামারের নিবন্ধন দেয়া ঠিক হবে না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলে পোল্ট্রি খামারের নিবন্ধন দেয়া ঠিক হবে না

ঢাকা: শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবী জুড়েই প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস এখন পোল্ট্রি। জনসংখ্যা বাড়ছে, তাই উৎপাদন বাড়াতে হবে, টেকসই করতে হবে পোল্ট্রি শিল্প।

এজন্য সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা না থাকলে কাউকেই পোল্ট্রি খামারের নিবন্ধন দেয়া ঠিক হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। সেমিনারে বিদ্যমান ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিষয়ে ৮৮টি দেশি-বিদেশি টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপন করা হবে। সেমিনারটি আয়োজন করছে ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)।  

সেমিনারের গবেষক ও বক্তারা বলেন, খামারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা না থাকলে কাউকেই পোল্ট্রি খামারের নিবন্ধন দেয়া ঠিক হবে না। খামারিদের বাঁচাতে হবে, একের অসতর্কতা অন্যের ক্ষতির কারণ। এভাবেই পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিক ও ওষুধের ব্যবহার বাড়ার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে।  

তারা আরো বলেন, দিন দিন যেভাবে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বাড়ছে, জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে তাতে নতুন নতুন রোগ-বালাই দেখা দিচ্ছে। আগামীতে পোল্ট্রি বিজ্ঞানীদের কাজ আরও অনেক বাড়বে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু, খরা সহিষ্ণু ধানের মত মুরগির জাতও উদ্ভাবন করতে হবে।  

বক্তারা বলেন, পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েই উৎপাদন বাড়াতে হবে, কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইন্ডাস্ট্রি বড় হচ্ছে তাই রিসাইক্লিং-এর কথাও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে সরকার এ ধরনের শিল্প স্থাপনে প্রণোদনা ও স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারেন।

ওয়াপসা-বিবি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে আমরা একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চাই। তাই অভিধান থেকে ‘অপুষ্টি’ শব্দটি মুছে ফেলতে হবে। আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাগুলোই আগামীর বাংলাদেশ, আগামীর পৃথিবী গড়তে সহায়ক হবে।  


তিনি বলেন, ভোক্তাদের ধারণা পোল্ট্রিতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় অথচ বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশে এখন প্রচুর পরিমাণে প্রিবায়োটিক, প্রোবায়োটিক, ফাইটোজেনিক, Essential Oil ইত্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে।  

ওয়াপসা-বিবি’র সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, পোল্ট্রি বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষকগণ পোল্ট্রি বিজ্ঞানকে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন সমাধান উপহার দিচ্ছেন। বিগত ২৮ বছর ধরে ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখা- ব্যবসা ও বিজ্ঞানের মাঝে সম্পর্কের সেতু বন্ধন তৈরি করেছে। বিজ্ঞানী-গবেষকদের কাজ কখনও শেষ হয়ে যায় না কারণ প্রতিটা দিনই এক একটা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়। আমাদেরকে সাধারণ খামারিদের কথা ভাবতে হবে কারণ তাদের সংখ্যাই বেশি। খামার থেকে শুরু করে খাবারের প্লেট পর্যন্ত পুরো চেইনকেই সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে।  

প্রথম দিনের অনুষ্ঠিত সেশনগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি প্রফেসর ড. এস.ডি চৌধুরি, বাকৃবি’র সাবেক উপাচার্য্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, বিএলআরআই এর সাবেক চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মো. গিয়াসউদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মেম্বার ডিরেক্টর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বাকৃবি’র প্রফেসর ড. কে.এম. সাইফুল ইসলাম এবং প্রফেসর ড. মো. শওকত আলী। কো-চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এ.টি.এম মাহবুব-ই-এলাহী, প্রফেসর ড. মো. বজলুর রহমান মোল্লা, বাকৃবি’র প্রফেসর ড. সুকুমার সাহা, প্রফেসর ড. মো. গোলজার হোসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. বয়জার রহমান, পরিচালক উৎপাদন ড. এ.বি.এম খালেদুজ্জামান এবং প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. মো. সাজেদুল করিম সরকারসহ আরও অনেকে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯,২০২৫
জিসিজি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।