ঢাকা: উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে হোটেল হায়াত রিজেন্সিতে এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানের বাংলাদেশ দূতাবাস।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) উজবেকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উজবেকিস্তানের ক্রীড়ামন্ত্রী আদখাম ইকরামভ।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনেটর, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং তাশখন্দে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তার বক্তব্যের শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সব শহীদদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি উজবেকিস্তানের জনগণসহ বিদেশি বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করেন, যারা ইতিহাসের কঠিন সময়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও সমর্থন করেছিলেন। এ সময় তিনি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অর্জন অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর আলোকপাত করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতির পুনর্ব্যক্ত করেন। উজবেকিস্তানকে বিশ্বস্ত বন্ধু এবং অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে ড. ইসলাম বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা উপস্থাপন করেন এবং টেক্সটাইল, ওষুধ, কৃষি, পর্যটন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সংস্কৃতি ও যোগাযোগ খাতে শক্তিশালী সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দুই দেশের জনগণের মধ্যে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং ধর্মীয় বন্ধনের কথা বর্ণনা করে তিনি বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় পরিসরে যে সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর জন্য আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতাকে আরও মজবুত করার ওপর জোর দেন। বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দৃঢ়তা ও সংকল্পের কথা তুলে ধরে তিনি শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের দেশাত্মবোধক সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা দ্বারা একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়, যা উপস্থিত দর্শকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ কেক কাটার মধ্য দিয়ে উদযাপনের সমাপ্তি ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
টিআর/আরবি