কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগরে মায়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে সপ্তম দফায় আরও ৪৮ জন দেশে ফিরেছেন।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ‘বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সেতু’ দিয়ে তাদের ফেরত আনা হয়।
ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে কক্সবাজারের ১৯ জন রয়েছেন। বাকিরা দেশের ১২টি জেলার বাসিন্দা।
বিজিবি কক্সবাজার ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, দু’দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে ৪৮ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বাংলানিউজকে বলেন, বিকেল ৩টার দিকে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা পুলিশ বাসে করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে নিয়ে আসার পর তাদের ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইওএম এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, ফেরত আসা ব্যক্তিদের ঘুমধুম সীমান্তে নিয়ে আসার পর থেকে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত খাদ্য, চিকিৎসা, যাতায়াত খরচসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে।
এর আগে, ঘুমধুম সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ‘বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সেতু’ দিয়ে বিজিবি কক্সবাজার ১৭ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকারের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল পতাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে মায়ানমার যান।
প্রতিনিধি দলে বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও চিকিৎসক, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্তের বিপরীতে মায়ানমারের ঢেঁকিবুনিয়ায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট সঙ্গে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের পর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত ৪৮ জনকে ফেরত আনা হয় হয়। মায়ানমারের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ইউ স নাইং।
মায়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে জাহাজে ভাসমান অবস্থায় চলতি বছরের ২১ মে ২০৮ জন ও ২৯ মে ৭২৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে উদ্ধার করে দেশটির নৌ-বাহিনী। এরপর থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশি বলে দাবি করে আসছিল মায়ানমার। পরে উভয় দেশের পররাষ্ট্র দপ্তর তালিকা তৈরি করে যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত ব্যক্তিদের ফেরত আনা হয়।
এর আগে, ৮ জুন ১৫০ জন, ১৯ জুন ৩৭ জন, ২২ জুলাই ১৫৫ জন, ১০ আগস্ট ১৫৯ জন, ২৫ আগস্ট ১২৫ জন ও ১২ অক্টোবর ১০৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত আনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৫
এমজেড