ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক এবারও মেয়েলি বিষয়গুলোই রাখলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমনকি ফ্রক, পুতুল, চুড়ি, ভ্যানিটি ব্যাগের মতো প্রতীকও রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন পৌরসভা নির্বাচন বিধিমালা সংশোধন করে এ প্রতীকগুলো সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য রেখেছে। সে অনুসারে বুধবার (০২ ডিসেম্বর) ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রতীক বরাদ্দের জন্য বলেছেন।
নির্দেশনা থেকে দেখা যায়- মেয়র পদে ৪০টি দলের জন্য ৪০টি সংরক্ষিত প্রতীক থেকে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রার্থীদের তার নিজস্ব প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মেয়র পদে ১২টি, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের জন্য ১০টি এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য ১২টি প্রতীক বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত প্রতীকও দেবে ইসি।
সংরক্ষিত কাউন্সিল পদের প্রতীকগুলো হলো- আঙ্গুর, কাঁচি, গ্যাসের চুলা, চকলেট, চুড়ি, পুতুল, ফ্রগ, ভ্যানেটি ব্যাগ, মৌমাছি ও হারমোনিয়াম।
সাধারণ কাউন্সিলর পদের প্রতীকগুলো হলো- উটপাখি, গাজর, টিউব-লাইট, টেবিল ল্যাম্প, ডালিম, ঢেঁড়শ, পাঞ্জাবি, পানির বোতল, ফাইল কেবিন্যাট, ব্রিজ, ব্ল্যাকবোর্ড ও স্ক্রু ডাইভার।
মেয়র পদের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীকগুলোর মধ্যে রয়েছে- আয়রন, কম্পিউটার, ক্যারাম বোর্ড, চামচ, জগ, টাই, নারিকেল গাছ, বড়শি, মোবাইল ফোন, রেল ইঞ্জিন, হ্যাঙ্গার ও হেলমেট।
আর মেয়র পদের জন্য বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে- ছাতা, বাই-সাইকেল, চাকা, গামছা, কাস্তে, নৌকা, ধানের শীষ, কবুতর, কুঁড়ে ঘর, হাতুড়ি, কুলা, লাঙ্গল, মশাল, তারা, গোলাপ ফুল, মই, গরুর গাড়ি, ফুলের মালা, বটগাছ, হারিকেন, আম, খেঁজুর গাছ, উদীয়মান সূর্য, মাছ, বাঘ, গাভি, কাঁঠাল, চাবি, চেয়ার, হাত ঘড়ি, মিনার, রিকশা, হাত পাখা, মোমবাতি, হুক্কা, কোদাল, দেওয়াল ঘড়ি, হাত (পাঞ্জা), ছড়ি ও টেলিভিশন প্রতীক।
চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় মুলা, কেটলি, টিস্যু বক্সসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ায় সংরিক্ষত আসনের নারী প্রার্থীরা অবমাননা করার অভিযোগ এনেছিলেন। সে সময় প্রার্থীদের সঙ্গে ইসির আলোচনায় নারী আসনের প্রার্থীরা এ নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছিলেন। তখন পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে অবমাননাকর প্রতীক রাখা হবে না বলেও সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিল ইসি।
কিন্তু আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনেও একই রকমভাবে ‘অবমাননাকর’ প্রতীকগুলোই রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা এখন আর পরিবর্তন করা যাবে না। প্রার্থীরা অভিযোগ করলে ভবিষতে তা পরিবর্তনে আলোচনা করা যেতে পারে।
অতিরিক্ত প্রতীক:
এদিকে, মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংখ্যা যদি ১২ জনের বেশি হয়, বা অন্য পদগুলোর প্রতীক সংখ্যার চেয়ে প্রার্থী সংখ্যা বেশি হয়, তবে নির্বাচন কমিশন অতিরিক্ত প্রতীক সংরক্ষণ করে দেবে। সেখানে থেকে অতিরিক্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দিতে হবে।
লটারিতে প্রতীক:
প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রতীক চাইতে হবে। প্রতীক বরাদ্দের সময় একই পদে একই প্রতীক একাধিক প্রার্থী দাবি করতে দেখা গেলে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রথমে নিজেদের মধ্যে সমঝোতার আহ্বান জানাবেন। তা না মানলে রিটার্নিং কর্মকর্তা লটারির মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দ দেবেন।
আগামী ১৩ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এরপর থেকেই প্রচারণায় যেতে পারবেন প্রার্থীরা। আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ২৩৫টি মেয়র, ৭৪২টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদ ও ২৯৬১টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন প্রার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
ইইউডি/আইএ
** গোপন চাঁদা বন্ধ করতে ৪ মন্ত্রণালয়ে ইসির নির্দেশনা
** প্রার্থী যেই হোক তার পক্ষেই অবস্থান নেবে ইসি