ঢাকা: নিজেকে শহরের ‘চিফ ক্লিনার’ দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নিজের সর্ম্পকে বলতে গিয়ে মেয়র বলেন, নাউ, আই অ্যাম চিফ ক্লিনার অব সিটি।
অনুষ্ঠানে তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা, সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
এ সময় তিনি রসিকতা করে বলেন, একজন স্ত্রীর কাছে এটা শোনা অসম্ভব যে, তার স্বামী একজন ভালো মানুষ। কিন্তু এই (ঢাকা সিটি করপোরেশন) নির্বাচনে আমি দেখেছি আমার স্ত্রী সব জায়গা বলে বেড়িয়েছেন আমার স্বামী একজন ভালো মানুষ।
'ইনক্লুশন ম্যাটারস: লুকিং টুওয়ার্ডস ২০২১' শীর্ষক প্রতিবন্ধী দিবসের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জার্মান সহযোগিতা সংস্থার (জিআইজেড) প্রকল্প ইনক্লুসিভ স্কিলস ডেভেলপমেন্ট (আইএসডি)।
জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনোমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিএমজেড) পক্ষে কাজ করে জিআইজেড।
দক্ষ প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের কর্মশক্তির মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের উদ্বুদ্ধ করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রতিবন্ধীদের কর্মস্রোতের মূল ধারায় যুক্ত করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, সবাই যদি একই মঞ্চে আসি, আমাদের দৃষ্টিকে প্রসারিত করি, একই মঞ্চে এসে মানুষকে টেনে তুলি, আমাদের সক্ষমতাকে কাজে লাগাই তবে আমরা প্রতিবন্ধীদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারব।
তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত আমাদের এ কাজ অব্যাহত রাখতে পারলে একদিন আসবে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়বে। বাংলাদেশ হবে সবোর্চ্চ রেকর্ড হোল্ডার, যারা প্রতিবন্ধীদের ক্ষমতায়ন করেছে।
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে কাজের সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আশা প্রকাশ করে মেয়র বলেন, একদিন সারা বিশ্বে বলবে বাংলাদেশে যাও এবং দেখো তারা কিভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী বা ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের পুর্নবাসন করেছে।
তৈরি পোশাক শিল্পে প্রতিবন্ধীদের কাজের মূল স্রোতধারার সঙ্গে যুক্ত করার বিশাল সুযোগের কথা তুলে ধরে ঢাকা উত্তরের মেয়র এবং তৈরি শিল্প খাতের একজন সফল ব্যবসায়ী মেয়র আনিসুল হক বলেন, আমি মনে এটি গার্মেন্টস শিল্পের প্লাটফর্ম করা সম্ভব। আমাদের খুব শক্তিশালী প্লাটফর্ম রয়েছে। আমরা প্রতিবন্ধীদের কাজের সুযোগ করে দিয়ে এ সেক্টরকে আরো গর্বিত করতে পারি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের এ যাত্রা চ্যালেঞ্জিং। তবে এটি আমাদের জন্য পুরস্কার, কল্যাণ নিয়ে
আসবে।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের কাজে নিতে উদ্যোক্তাদের মানসিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক ব্যবস্থাপকদেরও এ সমস্যা আছে। অথচ আমাদের উৎসাহী করতে ও অনুসরণ করার মতো অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে।
উন্নয়নের জন্য প্রতিবন্ধীদের মূল কর্মস্রোতের সঙ্গে সংযুক্ত করার আবশ্যকতা তুলে ধরে তিনি বলেণ, আমি বিশ্বাস করি আমাদের মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য পূরণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও মূল কর্মশক্তির অর্ন্তভুক্ত থাকবে।
প্রতিবন্ধীসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের আন্তরিকতা ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এদিকে, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘চ্যাম্পিয়নস অফ ইনক্লুশন’ সংগঠন যাত্রা শুরু করে। সংগঠনটি তৈরি পোশাক শিল্পে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মশক্তির মূল ধারায় অন্তর্ভুক্তিতে কাজ করবে।
পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), সেন্টার ফর ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিডিডি) এবং সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্যা প্যারালাইজড (সিআরপি) এর সহায়তায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত থমাস প্রিনজ, জিআইজেড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টবিয়েব বেকার প্রমুখ।
এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘একীভূতকরণ: সক্ষমতার ভিত্তিতে সকল প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন’।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
এমইউএম/এসআর