ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এগিয়ে চলছে স্বপ্নের মেট্রোর নির্মাণ কাজ

উর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
এগিয়ে চলছে স্বপ্নের মেট্রোর নির্মাণ কাজ ছবি: জি এম মুজিবুর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যানজটের নগরীতে ঘণ্টায় ৬০ হাজার অর্থাৎ দিনে ১৭ ঘন্টায় রাজধানীর মেট্রোতে যাতায়াত করতে পারবেন ১০ লাখ ২০ হাজার মানুষ। কমবে নগরবাসীর ভোগান্তি। আর সেই মেট্রো রেলের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।

ঢাকা: যানজটের নগরীতে ঘণ্টায় ৬০ হাজার অর্থাৎ দিনে ১৭ ঘন্টায় রাজধানীর মেট্রোতে যাতায়াত করতে পারবেন ১০ লাখ ২০ হাজার মানুষ। কমবে নগরবাসীর ভোগান্তি।

আর সেই মেট্রো রেলের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।
 
রোববার (১৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের তালতলা এলাকায় দেখা যায়, দ্রুত গতিতে চলছে মেট্রো রেলের কাজ। মেট্রো রেলের তিনটি রুটের একটি পল্লবী থেকে রোকেয়া সরণি-খামারবাড়ি-ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁও-শাহবাগ-টিএসসি হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত কাজ শুরু হয়েছে।


 
নির্মাণ কাজে নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মী মো. খালেদ সাইফুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, মেট্রো রেলের জন্য ১৩২ কেভিপাওয়ার ক্যাবল বসানোর কাজ চলছে তালতলা থেকে মিরপুর ১০ নম্বর পর্যন্ত। কাজটি করতে প্রায় ৪ মাস সময় লাগতে পারে। প্রতিদিনই সারারাত কাজ চলে। দিনে যান চলাচলের কারণে তেমন কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই মূল কাজটা হয় রাতেই।
 
ঢাকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) ২০২৪ সালের মধ্যে তিনটি পথের বাকি দুটি মেট্রো রেল চালুর পরিকল্পনা আছে উত্তরা-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-খিলগাঁও হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত, গুলশান-মিরপুর-মোহাম্মদপুর-ধানমন্ডি-তেজগাঁও-রামপুরা-বাড্ডা-বারিধারা হয়ে গুলশান পর্যন্ত।  

মাপ অনুযায়ী বেকু দিয়ে রাস্তা কেটে নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে মিরপুর ১০ নম্বর চত্বরের দিকে। কাটা রাস্তার উচ্ছ্বিষ্ট নিয়ে যাচ্ছে একের পর এক ট্রাক।


 
প্রতিদিন রাতে কাজ করেও যেন ক্লান্ত না শ্রমিক মাসুদ ও মালিক। মূলত মেট্রোরেলে কাজের জন্য ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন তারা। যেহেতু দুই বছর সময় লাগছে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে তাই এই কাজে কাজ করতে পেরে আনন্দিত তারাও।
 
মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, শুনছি এই রেল হইলে নাকি ঢাকা শহরের জ্যাম কমবো। ভালোইতো। বিদেশেও নাকি এমন রেল আছে। আমরা প্রতিদিনই সারা রাত জেগে কাজ করছি। কিন্তু একটা কাজ হাতে আছে ভাবতেই শান্তি লাগে। মানুষেরও জ্যাম কমলো আমাগো কাজের যোগান হইতাছে।
 
২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার মেট্রো রেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে অনুমোদন পায়। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো। থাকবে ১৬টি স্টেশন। ২০.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা দেবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
 
উল্লেখ্য মেট্রো রেল ব্যবস্থায় প্রথম ধাপে ট্রেন চলাচল করবে ২৪টি। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে ট্রেনগুলো। প্রতি ট্রেনে থাকবে ছয়টি বগি। একটি ট্রেনে এক হাজার ৬৯৬ জন যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে বসে যেতে পারবেন ৯৪২ জন, অন্যরা দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন। একটি স্টেশনে ট্রেন অবস্থান করবে ৪০ সেকেন্ড। যাত্রীরা ফুটপাত থেকে সিঁড়ি, এসকেলেটর কিংবা লিফটে উঠতে পারবেন ট্রেনে। মেট্রো রেলের প্রতিটি পিলারের ব্যাস হবে দুই মিটার, ভূমিস্থ অংশের ভিত্তি হবে তিন মিটার ও উচ্চতা হবে ১৩ মিটার। একটি পিলার থেকে আরেকটির দূরত্ব হবে ৩০ থেকে ৪০ মিটার। পিলারের ওপরে দুটি লাইন থাকবে এবং লাইনগুলোর প্রস্থ হবে প্রায় ৯.১ মিটার।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
ইউএম/আরএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।