ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘বে-লাইনেই’ চলছে যাত্রাবাড়ীর পাসপোর্ট অফিস

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৬
‘বে-লাইনেই’ চলছে যাত্রাবাড়ীর পাসপোর্ট অফিস ছবি- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কী লাভ? সামনে এগুচ্ছে না। কিন্তু যারা দালাল ধরেছে, তারা লাইন ছাড়াই ছবি তোলার কক্ষে যাচ্ছে আর বের হচ্ছে।

ঢাকা: ‘লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কী লাভ? সামনে এগুচ্ছে না। কিন্তু যারা দালাল ধরেছে, তারা লাইন ছাড়াই ছবি তোলার কক্ষে যাচ্ছে, আর বের হচ্ছে।

আমরাই থেকে যাচ্ছি লাইনে। এ অফিসে দালাল আর আনসারদের মধ্যে খুব মিল, তারা মিলে মিশেই করছে সিরিয়াল ভঙ্গের কাজ। আর তাদের কারণেই আমরা ভুক্তভোগী।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন গেন্ডারিয়া থেকে আসা নাজমুল হাসান।

তিনি জানান, পুরুষ আর মহিলাদের জন্য দুটি লাইন আছে। এখানে জায়গা কম দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে। এরমধ্যে কিছুক্ষণ পরপর লাইন ছাড়া মানুষদের নিয়ে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে দালালরা।

‘অনেকটা বে-লাইনেই চলছে পুরো পাসপোর্ট অফিস। সাধারণ মানুষের কষ্ট দেখার কেউ নেই’ বলেও মন্তব্য করেন নাজমুল হাসান।

যাত্রাবাড়ী রায়েরবাগের মুজাহিদনগরে একটি তিনতলা ভবনে যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। ওই ভবনের একতলা ও দোতলা মিলিয়ে ১৪টি কক্ষে চলছে পাসপোর্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম। তবে এই অফিসে নেই কোনো তথ্যকেন্দ্র। বেলা ১১টর দিকে পাসপোর্ট অফিসের দ্বিতীয় তলার ২০৫নং কক্ষের সামনে লম্বা লাইন দেখা যায়। সবাই ছবি তোলার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। তবে এর মধ্যে অনেকে সিরিয়াল ভেঙ্গ করে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিচ্ছেন দালাল ও আনসারদের সঙ্গে আঁতাত করে।

অফিসের গেটে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আবু আলম হাতে ফরমের কাগজ আর সঙ্গে একজনকে নিয়ে ২০৫ নম্বর কক্ষের ভেতর দিয়ে গিয়ে ২০৮ নম্বর কক্ষে ঢুকে যান। কিছুক্ষণ পর ছবি তোলাসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষ হয়ে তিনি বের হয়ে আসেন।

নাজমুল হাসান বলেন, ‘সেই সকাল সাড়ে ৮টায় পাসপোর্ট অফিসে আসছি। অনেক লম্বা লাইন। আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় হয় দাঁড়িয়ে আছি। আমার বাবা বৃদ্ধ মানুষ তবুও লাইনে আছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর-পর আনসার এবং দালালরা ভিআইপি লোকদের নিয়ে আসছে আর লাইন ছাড়া ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য আমাদের কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ’

শুধু নাজমুল হাসান নয়, তার মত অনেকেই বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করেন, এই অফিসে দালালদের উপদ্রব বেশি, তারা এখানকার স্থানীয় বিধায় অনেক শক্তিশালী। এখানে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দালাল বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ মানুষ এখানে এসে অনেক কিছু্ই বুঝে না। তাদের একটু সাহায্য করে আমরা কিছু ইনকাম করি।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দালাল চক্রের লোকদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানান ওই দালাল।

এদিকে, পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কদমতলী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখানে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। একদমই দালালদের দৌরাত্ব নেই। সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে বলা হচ্ছে। শৃঙ্খলার সাথেই সব কিছু পরিচালিত হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
এসজেএ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।