ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৬ ডিসেম্বর ভারতের জন্যেও আনন্দের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৬
৬ ডিসেম্বর ভারতের জন্যেও আনন্দের ছবি: বাদল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

‘৬ ডিসেম্বর শুধু বাংলাদেশের জন্যেই নয়, ভারতের জন্যও আনন্দের’ এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধণ শ্রিংলা।

ঢাকা: ‘৬ ডিসেম্বর শুধু বাংলাদেশের জন্যেই নয়, ভারতের জন্যও আনন্দের’ এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধণ শ্রিংলা।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

বাংলাদেশকে ভারতের কূটনীতিক স্বীকৃতির ৪৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

সভার বিশেষ অতিথি হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে বলেই দুই দেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি ও সমুদ্রসীমা নির্ধারণ সম্ভব হয়েছে। দুই দেশের উন্নয়নের জন্যেই আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

‘আর ৬ ডিসেম্বর শুধু বাংলাদেশের জন্যেই নয়, ভারতের জন্যেও আনন্দের। কেননা এ দিনই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো ভারত। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে শুধু বাংলাদেশেরই ৩০ লাখ মানুষই নয়, ভারতের সৈন্যরাও জীবন দিয়েছেন। ’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীকে ভারতের ‘খুউব ভালো বন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।  

মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিচারণ করে ভারতীয় এ রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে আমার বাড়ি। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স কম থাকলেও বোঝার বয়স ছিলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার খবরে অন্যদের সঙ্গে আমিও আনন্দিত হয়েছিলাম।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ভারত বাংলাদেশের গ্রেটেস্ট ফ্রেন্ড। আর সবচেয়ে বড় শত্রু পাকিস্তান। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে ভারতের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছে এবং সেভেন সিস্টার্সে জঙ্গিবাদ উত্থানে সহযোগিতা করেছে।

‘১০ ট্রাক অস্ত্রের আমদানি এরই অংশ। আর এতে ইন্দন দেয় পাকিস্তানের আইএসআই। ’

তিনি বলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী আম‍াদের বন্ধু ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায় করেছেন। তার সম্মানে বাংলাদেশের বিভিন্ন সড়কের নামকরণ করতে হবে।

‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ইন্দিরা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিলো। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তা ভেঙে ফেলেন। সেখানে শিশু পার্ক করা হয়েছে। বাংলাদেশের এই বন্ধুর সম্মানে একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করতে হবে। ’

কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাতেও পাকিস্তানের ইন্দন রয়েছে। পাকিস্তান একটি সন্ত্রাস উ‍ৎপাদনকারী রাষ্ট্র, পুরো বিশ্বে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেয়। এই দেশটিকে ঠেকাতে না পারলে এ ‍অঞ্চল হুমকিতে পড়বে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ-যে কিনা তিন লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু জামায়াত তাদের ভোটার করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। আমাদের এ বিষয়ে সচেতন হয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

আলোচনা শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

নির্মুল কমিটির উপদেষ্ট‍া অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সফরে যুদ্ধে শহীদ ভারতীয়দের সম্মাননা দেওয়া হবে

সভায় আলোচক ছিলেন- মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, মুক্তিয‍ুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা ড‍া. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৬
কেজেড/এমইউ/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।