ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘গুলি ছোড়ার’ নির্দেশ সিইসি’র

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘গুলি ছোড়ার’ নির্দেশ সিইসি’র

আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনে ‘গুলি ছোড়ার’ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

ঢাকা: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনে ‘গুলি ছোড়ার’ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

নির্বাচন দু’টি নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত এক বৈঠকে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন।

বৈঠকটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচন এবং ২৮ ডিসেম্বর ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন বাহিনী থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে নাসিক নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে কিছুটা সমস্যার আশঙ্কা করছে তারা।

সিইসি তাদের প্রয়োজনে গুলি ছোড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, নির্বাচন এলেই ভোটের আগের রাতে কেন্দ্র দখল হয়। প্রকাশ্য দিবালোকেও কেন্দ্র দখল হয়। এছাড়া ভোটকেন্দ্র ভেঙ্গে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

“৫’শ’ লোক কেন্দ্র দখল করে। আর আমাদের লোক অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে- এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আর্মস প্রোপারলি ইউজ করতে হবে (অস্ত্রের সঠিক ব্যবহার অর্থাৎ গুলি ছোড়া)। কেউ যেনো বলতে না পারে কেন্দ্র দখল হয়েছে”।

এছাড়া ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দৃশ্যমাণ করতে হবে। এতে ভোটাররা আস্থা পাবে।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ্ নেওয়াজ বলেন, কোনো দলের নেতা-কর্মীরা যেনো এসপি (পুলিশ সুপার)-ডিসিদের (জেলা প্রশাসক) কাছে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া জনপ্রতিনিধিরা যেনো নির্বাচনে সম্পৃক্ত হতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, আমাদের সবার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন- সেদিকে খেয়াল রেখেই কাজ করতে হবে।

মহাপুলিশ পরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেন, নির্বাচনে চার হাজার পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে আচরণ বিধি লঙ্ঘন রদ করা হয়েছে।

স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের পক্ষে ব্রি. জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বৈঠকের কার্যপত্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই। কাজেই এ নিয়ে স্বশস্ত্র বাহিনী কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। তবে ইসি থেকে চাহিদা এলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনা মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা থাকলে- তা যেনো বৈঠকের কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়।

আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান বলেন, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে আনসার বাহিনীর সদস্যদের হাতে রাইফেলের পরিবর্তে শর্টগান দেওয়া হবে।

বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, নির্বাচনে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।

র‌্যাবের (র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রয়েছে। এটা কনটিনিউ থাকবে।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সামছুল হক বলেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই।

পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আসন্ন নাসিক নির্বাচন নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো ‘থ্রেট’ নেই। তবে সাধারণ যেসব থ্রেট রয়েছে তা মোকাবেলা করা হবে।

ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স (ডিজিএফআই) মহাপরিচালকের প্রতিনিধি কর্নেল মুহাম্মদ সুমন রেজা বলেন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। একসঙ্গে কাজ করলেই শান্তিপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
ইইউডি/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।