ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যুদ্ধাপরাধী লালনকারীদের বিচারের সময় হয়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
যুদ্ধাপরাধী লালনকারীদের বিচারের সময় হয়েছে ছবি: পিআইডি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো তাদের লালন-পালনকারীদেরও বিচার করতে দেশবাসীকে এখনই সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা: যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো তাদের লালন-পালনকারীদেরও বিচার করতে দেশবাসীকে এখনই সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।


 
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 
শেখ হাসিনা বলেন, সময় এসে গেছে, দেশবাসীকে সোচ্চার হতে হবে। শুধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয়, যুদ্ধাপরাধীদের যারা লালন পালন করেছে, রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে, পতাকা তুলে দিয়েছে তারাও সমান অপরাধী।
 
‘যুদ্ধাপরাধীদের যেমন বিচার হয়েছে। এদেরও বিচার বাংলার মাটিতে হবে। ’
 
চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচার শুরু করেছি। এ বিচার চলতে থাকবে। এ বিচার শেষ হবার না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আজও চলছে।
 
‘যে যত ষড়যন্ত্র করুক। তাদের কেউ রক্ষা করতে পারবে না। ’

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যাতে কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্য পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল। শুধু কিছু সংখ্যক পাকিস্তানি হানাদারদের দোসর, পদলেহনকারীরাই এদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল।
 
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে নির্মমতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীভৎসভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। চোখের ডাক্তারের চোখ তুলে ফেলা হয়েছিল। হার্টের ডাক্তারের বুক চিরে হৃদপিণ্ড বের করে ফেলে দেওয়া হয়। যিনি লিখবেন তার হাত কেটে দেওয়া হয়েছিল।
 
আল বদর, রাজাকার, আল শামসসহ স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানি দালালদের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ভিতরে যদি কিছু বেঈমান জন্ম না নিতো, আল বদর, রাজাকার, আলশামস বাহিনী তৈরি না হতো তাহলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে এদেশের পথ ঘাট চেনা, কে কি করে তা জানা, বাড়ির ঠিকানা জানা সম্ভব ছিল না।
 
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর কয়েক প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারেনি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিথ্যার আবরণ দিয়ে দেশের মানুষকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ১৫ আগস্টের পর থেকে মনে হলো সমস্ত ইতিহাসটা পাল্টে গেল। বঙ্গবন্ধু ও যারা স্বাধীনতা এনেছিল তারাই যেন দোষী হয়ে গেল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারেনি।
 
শেখ হাসিনা বলেন, পরাজিত শক্তি, তাদের পদলেহনকারীরাই ১৫ আগস্টের পর ক্ষমতায় আসে। যখনই বঙ্গবন্ধু ভবনে যাই, বিশেষ দিনগুলোতে দোতলার সিঁড়িতে বসি। একটা প্রশ্নের উত্তর কখনও খুঁজে পাই না। বাঙালির জন্য আমার পিতা সারা জীবন কষ্ট করে গেলেন, তার বুকে কীভাবে গুলি চালালো।
 
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যারা পরাজিত হয়েছিল, তারা পরাজয় ভোলেনি। এই পরাজয়ের প্রতিশোধ তারা নিয়েছিলো ৭৫ এর ১৫ আগস্ট।
 
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী, শহীদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দিনের ছেলে শাহীন রেজা নূর, শহীদ ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা।
 
এ সময় মঞ্চে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ দলটির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
এমইউএম/এএ

আরও পড়ুন
** ‘মরে গেলে সম্পদ কী কাজে লাগবে?’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।