ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ বদলেছে, আন্তরিকতা বদলায়নি

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
বাংলাদেশ বদলেছে, আন্তরিকতা বদলায়নি

আমূল পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের। এ পরিবর্তন গর্বের, উন্নয়নের। তবে এখানকার মানুষগুলো সেই আগের মতোই আন্তরিক রয়েছে।

ঢাকা: আমূল পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের। এ পরিবর্তন গর্বের, উন্নয়নের।

তবে এখানকার মানুষগুলো সেই আগের মতোই আন্তরিক রয়েছে।

৪৩ বছর পর বাংলাদেশ সফরে এসে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন রাশিয়ার নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা কারামিশেভ ভ্লাদিমির আলেকজান্দ্রোভিচ।

যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে বন্ধু হয়ে পাশে থাকাদের একজন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ চলাচল করা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যুদ্ধের সময়ে ডুবিয়ে দেওয়া জাহাজ আর শত্রু নিধনে পুতে রাখা মাইনের কারণে বন্দরটিতে জাহাজ চলাচল ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু দেশের প্রয়োজন মেটাতে বন্দরটি ব্যবহারের কোনো বিকল্প ছিল না। আর সে সময়টিতে এ বন্দর ব্যবহারের উপযোগী করতে এগিয়ে এসেছিল বন্ধু প্রতীম দেশ রাশিয়া। টানা দুই বছর ধরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি চ্যানেলে মাইন অপসারণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরকে জাহাজ চলাচলের উপযোগী ও বিপদমুক্ত রাখতে সহযোগিতা করেছিল দেশটির নৌবাহিনীর সদস্যরা।   ভ্লাদিমির আলেকজান্দ্রোভিচ তাদেরই একজন।

বাংলাদেশের ৪৬তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সরকারের অতিথি হয়ে ঢাকা সফর করছেন তিনিসহ আরো আটজন।  

নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে ভ্লাদিমির আলেকজান্দ্রোভিচ বাংলানিউজকে বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী সময়টা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত কঠিন ছিল। দারিদ্র দূর করাটাই ছিল অন্যতম চ্যালেঞ্জ। তখন বিদেশি সাহায্যই ছিল প্রধান ভরসা। আর তাই চট্টগ্রাম বন্দরকে চালু রাখা অন্যতম প্রধান কাজ ছিল। সে দায়িত্ব পড়েছিল আমাদের ওপর।  

স্মৃতি হাতড়ে সাবেক এই রুশ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের চারিদিকে পাকিস্তান বাহিনীর বর্বরতার স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। সেটা দেখার মতো ছিল না। অথচ আজকের বাংলাদেশ স্বাবলম্বী। এটা দেখে সত্যি গর্ব হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা অতন্ত কষ্টের মধ্যেও মুখে হাসি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। সহজেই আমাদের আপন করে নিতেন। আজ এতো বছর পরে এসেও সেই একই রকম আন্তরিকতা নিয়ে তারা আমাদের গ্রহণ করেছে।

রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সবচেয়ে প্রবীণ কর্মকর্তা কজুরিন ভিক্টর পাভলভিচ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে মাইনমুক্ত করতে দিনরাত কষ্ট করতে হয়েছে। ডুবে যাওয়া জাহাজগুলো তোলাও ছিল অত্যন্ত কষ্টের। ক্রেন ছিঁড়ে যেতো। এতে আমাদের অনেক সৈন্য নিহত হয়েছেন। তাই বলা যায়, আজকের বাংলাদেশের পেছনে রুশদেরও অবদান রয়েছে।

সরকারের আমন্ত্রণে আবারও ঢাকা আসতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বাংলাদেশের জন্ম লগ্নের এই বন্ধুরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৮ ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
জেপি/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।