রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে বেনাপোল বন্দরে যাত্রীপ্রতি ৪১ টাকা থেকে ৪৫ টাকা হারে কর আদায় করতে দেখা যায়। এর আগে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভারত ভ্রমণে বন্দরের ভ্রমণ কর মওকুফ ছিল।
জানা যায়, প্রতিদিন বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ থেকে আট হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছে। যার অধিকাংশ যাত্রী চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছেন। ভারতীয় যাত্রীরা যারা বাংলাদেশে আসেন ভারত সরকার তাদের কাছ থেকে কোনো ভ্রমণ কর আদায় করেন না। কিন্তু বাংলাদেশিরা ভারতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ সরকার যাত্রী প্রতি ৫০০ টাকা ও বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ৪০ দশমিক ৭০ টাকা হারে ভ্রমণ কর আদায় করে থাকেন। তবে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ ট্রাক্স মওকুফ করলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন করে ভ্রমণ কর সংযোগ করেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে কর্মরত সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ মোট ৫৪১ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে প্রথম থেকেই শিশু, ক্যান্সার রোগী, যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী পাসপোর্ট যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ভ্রমণ কর মওকুফ ছিল। চলতি সপ্তাহে বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব যাত্রী প্রতি ৪০ দশমিক ৭০ টাকা হারে ভ্রমণ কর আদায়ের নির্দেশনা দেন তাদের।
বেনাপোল চেকপোস্টে অবস্থিত রাজা-বাদশা মানিচেঞ্জারের সত্ত্বাধিকারী আবুল বাশার বাংলানিউজকে জানান, প্রায় তিন বছর হচ্ছে কেবল টয়লেট সুবিধা ছাড়া প্রতিশ্রুতিকৃত কোনো সেবায় চালু করতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। অথচ প্রতিবছর এ ট্যাক্স বেড়ে চলছে। এর মধ্যে আবার অসহায় মানুষদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর আদায় শোভনীয় দেখায় না।
ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশে বেনাপোল বন্দরে আসা ক্যান্সার ও প্রতিবন্ধী যাত্রীরা বলেন, এর আগে তারা যখন ভারতে গেছেন তাদের কোনো ভ্রমণ কর দিতে হয়নি। কিন্তু এখন বন্দর ভ্রমণ কর নিচ্ছে। বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষকে পুনরায় বিবেচনা করার আহ্বান জানান এই পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।
এদিকে বন্দরের ভ্রমণ কর যাত্রী প্রতি ৪০ দশমিক ৭০ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের ভ্রমণ কর ৫০০ টাকা নির্ধারণ হলেও কর্তৃপক্ষ খুচরা পয়সা নেই অযুহাত দেখিয়ে ৪০ দশমিক ৭০টাকার স্থলে ৪২ টাকা থেকে ৪৫ টাকা এবং ৫০০ টাকার স্থলে ৫১০ টাকা আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ট্যাক্স ছাড়াও বাড়তি আদায় হচ্ছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। এ অর্থ সোনালী ব্যাংক ও বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এই ভ্রমণ কর চালু করা হয়েছে। এখন থেকে সব ধরনের যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ৪০ দশমিক ৭০ টাকা হারে বন্দরের এই কর পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এজেডএইচ/আরআইএস/