ঢাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সম্পদের নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে আধুনিক যন্ত্রপাতি, উন্নত প্রযুক্তি এবং দক্ষ জনবলের সমন্বয়ে একটি আধুনিক ইউনিফর্ম কমান্ড, কন্ট্রোল ও মনিটরিং প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর মাধ্যমে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার।
এসব পরিকল্পনা ‘ডেভেলপমেন্ট অব ঢাকা সিটি ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম’ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ২ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার প্রস্তাবনা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীকে দ্রুত শনাক্তকরণ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য একটি আধুনিক ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করবে সরকার। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। এরপরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে প্রকল্পটি।
প্রকল্প প্রসঙ্গে জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-প্রধান (পরিকল্পনা) শেখ সাকিল উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, উন্নত শহরের আদলে ঢাকার অনেক কিছুই ডিজিটাল মনিটরিংয়ের আওতায় আসবে। নগরীর অপরাধ দমন ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় মূলত নগরী ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেমের আওতায় আসবে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাস্তবায়নেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। সামনে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হবে। গুরুত্বপূর্ণ কাজটি বাংলাদেশ পুলিশ বাস্তবায়ন করবে।
‘প্রকল্পের আওতায়, ট্রাফিক আইন ও নির্দেশিকা এবং ট্রাফিক সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ঢাকায় ম্যাসেজ বোর্ড স্থাপনও করা হবে। ’
জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় নগরীতে সিসিটিভি সিকিউরিটি সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম, ইন্টেলিজেন্ট ক্রাইম অ্যান্ড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ভয়েস, ডাটা অ্যান্ড ভিডিও অল ইন ওয়ান ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম এবং গানশট ডিটেকশন সিস্টেম কেনা হবে। ফলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিস্টেমটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতা ও অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধি করবে। এ প্রকল্পে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডিএমপি এলাকার জনগণের জন্য সার্বক্ষণিক সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্র আরও জানায়, প্রকল্পের আওতায় নাগরিকদের জন্য সার্বক্ষণিক হটলাইন সেবা চালু করা হবে। অপরাধ প্রতিরোধের জন্য সব ধরনের ডিজিটাল পদ্ধতি নেওয়া হবে। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে নিরাপদ তথ্য আদান প্রদানের জন্য নিজস্ব নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। ভিভিআইপি ও ইভেন্টের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য টেকনোলজির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় আরও কিছু আধুনিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। নাগরিকদের জন্য সার্বক্ষণিক হটলাইন সেবা দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে নিরাপদে তথ্য আদান-প্রদানে নিজস্ব নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। ইন্টেলিজেন্ট ক্রাইম অ্যান্ড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের জন্য বিশ্বমানের আইটি অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে ডিএমপি এলাকায়। যেন সেন্ট্রালাইজড এবং বিশ্বমানের সিস্টেমের মাধ্যমে পুলিশের কার্যক্রম পরিচালন করা যায়। প্রকল্পের আওতায় কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডিএমপির জনবলের সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
এমআইএস/এইচএডি/