ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সচিবালয়ের আশপাশে হর্ন বাজালে এক মাসের জেল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯
সচিবালয়ের আশপাশে হর্ন বাজালে এক মাসের জেল

ঢাকা: প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়ের আশপাশে ঘোষিত ‘নীরব এলাকা’য় যানবাহনের হর্ন বাজালে সরকারের প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী জেল-জরিমানা শুরু হচ্ছে আগামী ১৭ ডিসেম্বর।

সচিবালয়ের চারপাশ অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকা নীরব জোন বা নো হর্ন জোন হিসাবে হর্ন বাজালে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন গাড়ির চালক।
 
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে গত ২৫ নভেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে সচিবালয়ের চারপাশ ‘নীরব জোন’ হিসাবে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়।

শব্দ দূষণের মারাত্মক ক্ষতি থেকে রেহাই দিতে এ সিদ্ধান্ত হয়।  
 
আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘নীরব জোন’ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় হর্ন বাজানো যাবে না।
 
‘নীরব জোন’ কার্যকর করতে রোববার (০৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে প্রণীত ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ অনুযায়ী ‘নীরব জোন’ বলতে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বা একই জাতীয় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এবং এর চারিদিকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এলাকাকে বুঝায়।
 
বৈঠকে উপস্থিত উপস্থিত কর্মকর্তারা।  বিধিমালায় বলা হয়েছে, কেউ এই বিধান প্রথম লঙ্ঘণ করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পরবর্তী অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
 
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব বিল্লাল হোসেন বলেন, নীরব জোনে হর্ন বাজালে বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হবে। এজন্য মোবাইল কোর্ট ও অন্যান্য সংস্থা অভিযান পরিচালনা করবে।
 
শব্দ দুষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচারণার জন্য টেলিভিশেনে স্ক্রল, ফেসবুকে প্রচারণা, মোবাইলে ম্যাসেজ প্রদান এবং লিফলেট বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সভায়।
 
অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবো, যাতে তাদের কর্মকর্তাদের গাড়ির চালকেরা সচিবালয়ের আশেপাশে হর্ন না বাজায়। এছাড়াও সচিবালয়ের ভেতরেও লিফলেট বিতরণ করা হবে।
 
বাস চালকদের সচেতন করতে মতিঝিল, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হবে।
 
পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, ১১ ডিসেম্বর থেকে তারা লিফলেট বিলি শুরু করবেন।
 
‘নীরব জোন’ কার্যকরের জন্য সচিবালয়ের চারপাশ অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় চারটি নীরব জোন বা নো হর্ন জোন চিহ্নিত সাইন বোর্ড স্থাপন করা হবে। হর্ন বাজানো বন্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
 
‘নীরব জোন’ বাস্তবায়নে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জন নিরাপত্তা বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করবে বলেও সভায় জানানো হয়।
 
চালকদের লাইসেন্স প্রদান এবং নবায়নের সময় অপ্রয়োজনে হর্ন না বাজানোর বিষয়টি লাইসেন্সের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করতে অনুরোধে জানানোর বিষয়টিও সভার আলোচনায় ছিল।  
 
‘নীরব জোন’ বাস্তবায়নে সচেতনতা সৃষ্টি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং এ লক্ষ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।